পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালী—মরণের পথে HIN রাজমিস্ত্রীও পশ্চিম । সুত্রধর অর্থাৎ ছুতারমিস্ত্রী চীনাদের সহিত প্রতুিয়োগিতায় দিন দিন হটিয়া যাইতেছে। চীনারা যে শুধু ভালকাজ দেয় তাহা নহে, ইহারা অধিক কষ্টসহিষ্ণু, মনিবের চোখের আড়াল হইলেও ফাকি দিতে জানে না। স্বতরাং যদিও ইহারা বেশী মজুরী দাবী, করে, P. W. D., রেলওয়ে প্রভৃতি বিভাগে কাজ ইহার একচেটীয় করিতেছে। এই সব চীন মিস্ত্রী অশিক্ষিত এবং তাহারা কতদূর তইতে আসিয়া এদেশ জুড়িয়া বসিয়াছে। ইহাদের কেহ কেহ আবার কলিকাতা সহরে বিরাট কর্ম্মশালা ( Carpentry) স্থাপন করিয়াছে। কলিকাতার যাবতীয় মোটর চালক ও মোটরের মিস্ত্রী প্রায়ই পাঞ্জাবী। ইহারা সংখ্যায়, পাচ ছয় হাজারের কম হইবে না, ভবানীপুর অঞ্চলে বড় বড় উপনিবেশ সংস্থাপন করিয়াছে | কলিকাতার যাবতীয় কুৰী মজুর, রাধুনী বামুন, বেহার, দারোয়ান, ডাকপিয়ন, কনেষ্টবল সমস্তই অবাঙ্গমলী । আজকাল সমস্ত কলিকাতা ও সহরতলী—ভবানীপুর প্রভৃতি অঞ্চলে যাবতীয় বড় বড় মিঠাইয়ের দোকানও পশ্চিম হালুইকরগণ অধিকার করিয়াছে। আশ্চর্য্যের বিষয় এই এসমস্ত ক্ষেত্রেই বাঙ্গালী ছিল । গঙ্গা এবং অন্যান্য নদীতে যত মাঝি মাল্লা—তাম্বারাও বাঙ্গালী ছিল, এমন কি খেয়াঘাটওলা পর্যন্ত এখন পশ্চিমাদের । বজবজ হইতে আরম্ভ করিয়া ত্রিবেণী পর্য্যস্ত গঙ্গার দুই ধারে প্রায় ৮২টা পাটের কল আছে। বল, বাহুল্য ইহার একটিও বাঙ্গালার নয়। মাত্র সম্প্রতি দুইটা মাড়োয়ারীরা খুলিয়াছেন। এই সমস্ত পাটের কলে অনুন চারি লক্ষ মজুর আছে। ১৯৪৬ সালের একটি সরকারী রিপোর্টে প্রকাশ যে, ২০ বৎসর পূর্ব্বে (অর্থাৎ ১৮৮৬ সালে ) ঐ সব কলে সমস্ত শ্রমিকই বাঙ্গালী ছিল ; কিন্তু আজ শতকরা ৫ জন বাঙ্গালী হইবে কিনা সন্দেহ । -