পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী করিয়া জলিয়া উঠিল—কর্ম্মক্ষম হইয়াও বাঙ্গালী স্বাধীন ব্যবসার দ্বার। স্বাধীন জীবিকা অর্জন করিতে অক্ষম হইয় পড়িলেন। ইত্যবসরে গুজরাট, রাজপুতনা ( বিকানীর ) ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলবাসিগণ ঝাকে ঝণকে আসিয়া সমস্ত ব্যবসা দখল করিতে লাগিলেন, আর বাঙ্গালী ধ্রুবতারার দ্যায় কেরাণীগিরি লক্ষ্য করিয়। ইংরাজী শিখিতে লাগিলেন । সুতরাং উচ্চশিক্ষার অভিমানে জলিয়া পুড়িয়াও ২০২২৫ টাকার কেরাণী বৃত্তিতেই জীবন যাপন বাঙ্গালী যুবকের চরম পুরস্কার নিদ্ধারিত হইল। এই প্রকারে ইংলণ্ডের রাজলক্ষ্মীর অনুগামী হইয়া বাঙ্গালী কেরাণী পঞ্জাব হইতে ব্রহ্মদেশ পর্য্যন্ত ছড়াইয়া পড়িল, আর কিসে চাকুরী ‘বাগাইবী, মস্তিষ্কের প্রখরতা উহাতেই ব্যয়িত হইতে লাগিল। বস্তুতঃই উদরের উৎকট চিন্ত বাঙ্গালীর মনুষ্যত্ব পর্য্যন্ত কাড়িয়া লইয়াছে। সাধারণ সরলতা ও সাহসিকতা পর্যন্ত হৃদয় হইতে উৎপাটিত হইয়ছে, এখন বুদ্ধির প্রাথর্য্য ঘৃণিত চাটুকারিতায় ও ততোধিক ঘৃণিত কপটতায় দৃষ্ট হইতেছে। বিশ্বস্ত স্বত্রে শুনিয়াছি মফস্বলে কোন ইংরাজ জজের প্রিয়তমা পত্নীর বিয়োগ হয় । এই নববিবাহিত পত্নীর বিয়োগজনিত নিদারুণ শোক অপনোদন করিবার নিমিত্ত উক্ত জঞ্জ মহাশয় প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে মৃত পত্নীর কবর সন্নিহিত হইয়া নির্জনে অশ্রুপাত করিতেন। তদর্শনে একজন সুচতুর উমেদার বুঝিল, এই উপযুক্ত সময় উপস্থিত। সে পরদিবস কিছু অগ্রে যাইয়া ভেউ ভেউ করিয়া কৃত্রিম কান্না কাদিতে লাগিল ও সজোরে বক্ষে করাঘাত করত, “ম আমার চলিয়া গিয়াছেন", “আর আমায় কে পালন করিবে” ইত্যাদিবং চীৎকার করিতে লাগিল। বলা বাহুল্য, রাজপুরুষ অচিরে এই সহানুভূতির পুরস্কারের ব্যবস্থা করিলেন। বস্তুত: চাকুরী যাহাদের উপজীবিকা হইয়া দাড়াইয়াছে, তাহাদের আত্মসম্মান জ্ঞান আদৌ নাই বলিলেও