পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালীর মস্তিষ্ক ও তাহার অপব্যবহার ඵ) স্কুল কলেজে অসার ও নীরস জ্ঞান আহরণের চেষ্টায় যেমন বালকগণের মস্তিষ্কের অপব্যবহার হয়, তেমনি যুবক ও প্রৌঢ়গণ তাহাদের অবসরকাল বিদ্যাকুশীলনে ব্যয় না করিয়া গালগল্প ও নভেল পাঠ দ্বারু নষ্ট করিয়া থাকে। তাহারা বুঝে না একখানা নিকৃষ্ট নভেল পড়িয়া যে টুকু আনন্দ পাওয়া মায় ইতিহাস, জীবন-বৃত্তান্ত বঁ৷” ভ্রমণ-বৃত্তান্ত পড়িলে তাহার অপেক্ষ অধিক আনন্দলাভ হয়, অথচ সঙ্গে সঙ্গে যথেষ্ট জ্ঞানবৃদ্ধি হয় । আর কয়েকটা কথা রলিয়। আমি এই প্রবন্ধুের উপসংহার করিব । আমি বুঝিতে পারিতেছি যে, প্রবন্ধের মধ্যে মধ্যে ভুয় ত মাবেগের বশে দুই একটা শক্ত কথা বলিয়া ফেলিয়াছি। আশ। করি পাঠক বিশ্বাস করিবেন, যে সেই সকল কথা আমি বিদ্বেষের বশে লিখি নাই, জাতীয় দারুণ দুরবস্থা জনিত দুখেই আমাকে ঐরুপ বলাইয়াছে। " ভারতবর্ষীয় প্রাচীন গৌরবের কথা আমি ভুলি নাই ; পূর্ব্বপুরুষগণের পবিত্র স্মৃতির প্রতিও আমি কাহাকেও সন্ত্রমহীন হইতে বলি না । কিন্তু র্যাহারা সেই স্মৃতির প্রতি সন্ত্রমযুক্ত হইতে গিয়া তাহাদিগের ভুলগুলিকেও অলঙ্কার-বিভূষিত করিতে চাহেন—সে গুলির অনুকরণ করিতে চাহেন, তাহাদিগের জন্যই আমার এ প্রবন্ধের অবতারণা | w কুল্পকভট্ট ও রঘুনন্দনের অপূর্ব্ব পাণ্ডিত্যের প্রশংসা শুনিয়াই যাহারা দুেশ সেই প্রাচীন টােলের শিক্ষা-খুণালী সংস্থাপন করিতে চাহেন, নূতনকে একেবারে তাড়াইয়া পুরাতনকে তাহার স্থানে আনিতে চাহেন, তাহাদিগের সহিত আমি কখনও একমত হইতে পারি না। নূতন ভারতবর্ষীয় জাতি, নূতন ও পুরাতন উভয়ের সম্মিলনে গঠিত হইবে। অন্ধ বিশ্বাস জাতীয় উন্নতির মূল হইতে পারে না।