পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী মাটিকুলেশনে ছাত্রের সংখ্যা প্রত্যেক বৎসরেই বৃদ্ধি পাচ্ছে । কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, বৃদ্ধিমাত্রেই কি স্বাস্থ্যের লক্ষণ ? দেশে জ্ঞানতৃষ্ণা বাড়ছে এই ভেবে অনেকেই আশ্বস্ত হন । কিন্তু এ কি স্বাস্থ্যকর তৃষ্ণ ? অথবা বিস্তুচিকার তৃষ্ণার মত ভয়ঙ্কর! আমি অনেক সময় পাড়াগায়ে গিয়ে থাকি। বাগেরহাট অঞ্চলে গিয়ে দেখেছি সেখানে শুধু কায়স্থ ব্রাহ্মণ বৈদ্য নয়, নমঃশূদ্র মাহিষ্য বারুইদের মধ্যে লেখাপড়া শিখবার আগ্রহ বেড়ে চলেছে । বেশ কথা । কিন্তু এই জ্ঞানতৃষ্ণাই,অস্বাস্থ্যের লক্ষণ হ’য়ে দাড়ায়, যখন প্রত্যেক মাটিকুলেট্‌ কলেজে প্রবেশ লাভ করবার জন্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় ছুটাছুটি করতে থাকে। কলেজে . স্থানাভাব। অথচ মাটিকুলেশন পাশ করে প্রত্যেককে , কলেজে পড়তেই হবে-কেননা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপটা’কে জীবিকার্জনের একমাত্র উপায় ব’লে ধ’রে নিয়েছি। অন্য কোন উপায়ে যে অন্নসংস্থান হ’তে পারে এ ধারণ আমাদের নেই বললেই চলে। কাজেই কোন রকমে পয়স-কড়ির যোগাড় ক’রে ( দরিদ্রা বিধবা মা-মাসীর গহন বাধা দিয়ে ) ছুটে চল ঐ কলেজের দিকে। সেখানে ঠেসাঠেসি ঘেসাঘেসি ; তবু ছেলের ছুটে চলেছে—সম্মুখে গিয়ে বসবে ; ধাক্ক|ধাকিতে পড়ে কেউ মারাই বা যায়! ৪৯ মিনিটে পিরিয়ড, দলে দলে ছেলেরা সকালে বিকালে উপরে নীচে পাতালে, সব জায়গাতে পড়াশোনা করছে। ছাত্রদের জ্ঞানলাভে তেমন কোন আগ্রহ নেই— কোনরকমে নোট মুখস্থ ও পাসেন্টেজ, রক্ষা করে ডিগ্রী পেলেই বস খুলী। তার কলেজের পাঠ্যপুস্তকের অতিরিক্ত কোন বই পড়বে না, কারণ পাশ করবার জন্যে সে সকল পাঠ করবার কোন আবশ্বক নেই। কোন নূতন কথা নয়, কোন অবাস্তুর কথা নয়—শুধু নোট দাও আর লাল নীল সবুজ পেন্সিলে সব দাগ দিয়ে নিতে বল। পরীক্ষা _.