পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৮ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী যার উচু জাত, দরিদ্র হলেও তারা কৃষিশিল্প বা বাণিজ্যের দিকে ঘেস্তে চান না; সমাজে আভিজাত্য নষ্ট হবে এই কথাটা কুসংস্কার; আজ জাতিভেদের কঠোরতা কতকটা শিথিল হলেও, এখনও তাদের ঘাড়ে চেপে আছে । আপনারা সকলেই জানেন হিন্দুদের মধ্যে র্যার উচ্চ জাতি তারাই অপরের চেয়ে লেখাপড়ায় অধিক অগ্রসর হয়েছেন। বাঙলাদেশে ব্রাহ্মণ, কায়স্থ ও বৈদ্যেরাই সর্ব্বাপেক্ষ অধিক শিক্ষিত। মান্দ্রাজে আয়ার ও আয়েঙ্গারগণ এবং মহারাষ্ট্রে তিলক, গোখলে, পরঞ্জপে, ভাণ্ডারকর, চন্দাভরকর, এবং চিৎপবন ব্রাহ্মণগণ বিদ্যাশিক্ষার আলোক অনেক পরি মাণে লাভ করেছেন। কিন্তু এর সকলেই কেরাণী বা শিক্ষক অথবা উকীল এবং ডাক্তার। চাকরীর ক্ষেত্রে উচু জাতের বাঙালী ও মান্দ্রাজীর মধ্যে প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়েছে। বাঙালী গ্রাজুয়েটু যদি বা ৩৫২ টাকা চান, মন্দ্রিাজী গ্রাজুয়েট ৩০ টাকায় খুলী । বাঙালী শাকের সঙ্গে দুটো চিংড়ী মাছ ফেলে ঘণ্ট করেন, আর মান্দ্রাজী ভাতের সঙ্গে একটু তেঁতুলের জল পেলেই তুষ্ট । আজ চালের মণ ১১ টাকা, মাছের সের ১২ টাকা । কাজেই উপবাসে আমরা মারা যাচ্ছি। আমাদের যে স্কুলকলেজের লেখাপড় শেখা, সে শুধু চাকরীর জন্যে। উচ্চজাতীয় শিক্ষিত লোকের ব্যবসায়ে যেতে অনিচ্ছুক—দ্বিধাবোধ করেন । বহুকাল পূর্ব্বে জাপান ও ফ্রান্সের অবস্থা কতকটা এইরূপ ছিল। অভিজাত বংশের কেউ ব্যবসা বাণিজ্যে প্রবৃত্ত হতে চাইতেন না । সেদিন তাদের কেটে গেছে—আমাদের কিন্তু কাটেনি। আজ যুরোপ ও জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ছাত্রসংখ্যা বেড়ে চলেছে, তার কারণ শিল্প ও বাণিজ্য প্রসার লাভ করছে এবং ছাত্রের সেই সকল বিষয়ে শিক্ষালাভ করবার জন্তে উত্তরোত্তর আগ্রহ প্রকাশ করছে! আর আমাদের দেশেও ছাত্রসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু কারণটা কি ? বলা শক্ত । চাকুরীর ক্ষেত্র