যান। তারা প্যারীতে গিয়ে বেশ আনন্দ করেন। তাদের নিউইয়র্ক যাবার ফুরসত হয় না এবং যদি কেউ ভুল করে নিউইয়র্কে যান তবে হারলামের দিকে যেতে চান না পাছে তাদের সম্মানের লাঘব হয়। কি করে সম্মানের লাঘব হয় হয় তা হয়ত পাঠক মোটেই বুঝবেন না। আমেরিকায় আজও ভারতবাসী অছুতরূপেই গণ্য হয়। যদি কোন পর-শ্রমজীবী বিলাত ভ্রমণ করে আমেরিকায় যান তখন দেখতে পান তিনি একজন ভারতীয় হরিজন ছাড়া আর কিছু নন। তাই কোনমতে শ্বেতকায়দের সংগে দিনকয়েক কাটিয়ে মানে মানে দেশে ফিরে আসেন। হারলামের কথা মনেতেই রাখেন, মুখে প্রকাশ করেন না।
প্যারীতে টাকার অভাব লেগেই আছে। নিউইয়র্কে টাকার অভাব নাই। কিন্তু সে টাকা শুধু ধনীদের মাঝেই সীমাবদ্ধ তাই নিউইয়র্ক টাকায় বোঝাই হয়েও দরিদ্রতায় পূর্ণ। নিউইয়র্ক লণ্ডন হতেও বড়। এই নগরের সকল কথা যদি জানতে হয় এবং দেখে তা উপলব্ধি করতে হয় তবে অন্তত ছয়টি মাস ক্রমাগত তথায় ঘুরে বেড়ান দরকার। আমার সে সুযোগ হয় নি তবে এ কথা বলতে পারি সাইকেলে, কারে, এলিভেটারে, বাসে এবং স্যাবওয়েতে যতটুকু ভ্রমণ করেছি ততটা সকলে পেরে উঠে না। এত ছুটাছুটি করে জানতে পেরেছি দরিদ্রতা কোথা হতে এসেছে। পাদ্রীরা বলে মদ খেয়ো না, অথচ মদের দোকান চব্বিশ ঘণ্টা খুলে রাখার ব্যবস্থা আছে। ঠিক সেরূপভাবে যুবক-যুবতীদের নানা উপদেশ দেওয়া হয়। অথচ তাদের ধ্বংসের পথ এত ব্যাপকভাবে খুলে রাখা হয়েছে যে তারা নিজেদের অজ্ঞাতসারে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর কি কোন প্রতিকার নাই? প্রতিকার আছে। সে প্রতিকারের জন্য সরকার একেবারে উদাসীন। যারা পারছে তারাই সেই ধ্বংসের পথ হতে ফিরে আসছে আর যারা পারছে না তারাই অকালে অক্কা পাচ্ছে।