পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



আজকের আমেরিকা
১৫৯

আমার ভ্রমণকথার সমাপ্তি হবে না। পৃথিবীর বৃহত্তম প্রপাত দেখবার জন্য লক্ষ লক্ষ নরনারী দেশ বিদেশ থেকে এসে থাকে। একটির নাম নায়গ্রা, অপরটির নাম ভিক্টোরিয়া। দুই প্রপাতই আমি দেখেছি, দুই-ই এক ধরনের। তবে ঋতুর প্রভাবে জলের স্রোতের প্রখরতার কমিবেশি হয়ে থাকে। নায়গ্রা প্রপাতে যখন বন্যার জল আসে তখনকার অবস্থা চোখে না দেখলে ছবি দেখে কিছুই বোঝা যায় না। জল বহুদূর হতে আসে, বহুদূর হতে জল আসার জন্য স্রোত তীব্র হয়ে উঠে। তারপর সেই প্রবল জলধারা একসংগে দেড়শত ফুট নীচে পড়ে যে ভীষণ শব্দের সৃষ্টি করে তা সত্যই বর্ণনাতীত। নায়গ্রা প্রপাতের আরও একটি বিশেষত্ব আছে। শীতের সময় এই প্রবল জলস্রোত বরফে পরিণত হয়। প্রপাতের জায়গাটিতে বরফের ফোয়ারা দেখতে পাওয়া যায়। অবশ্য যা দেখিনি তা নিয়ে বেশি কথা বলা কথার বাহুল্য মাত্র।

 ভিক্টোরিয়া প্রপাতের জল পড়া অন্য ধরনের। ছোট ছোট নদী নালা বয়ে জল আসছে। তারপর চলছে এক সমতল ভূমির উপর দিয়ে। সেই সমতল ভূমির উপর বাঁদর লাফাচ্ছে, ছাগল ঘাস খাচ্ছে, এমন কি চড়ুই পাখীও কখন কখন ঝাঁকে ঝাঁকে এসে জল খাচ্ছে। এখানে নায়াগ্রা এবং ভিক্টোরিয়ায় অনেক প্রভেদ। আবার বর্ষার সময় ভিক্টোরিয়ার জল যখন পর্বত থেকে নীচে নেমে আসতে থাকে, তখন বাস্তবিক এক ভয়াবহ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

 নায়গ্রা প্রপাতের দুই দিকে বিস্তীর্ণ ভূমি। উভয় দিকে তাকিয়ে দেখলে দেখা যায় শস্যশ্যামল ও সমতল শস্যক্ষেত্র। নায়গ্রা প্রপাতের অবস্থা দেখে অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কারণ যে স্থানে প্রপাতের ঠিক আরম্ভ হয়েছে সেখানে পাথর ধ্বসতে ও খস্‌তে আরম্ভ হয়েছে। ভয় এই যে ধ্বসা এবং খসা নিবারণ না করলে কালক্রমে