পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



আজকের আমেরিকা
১৮৩

বলেছিলাম। শেষে বলেছিলাম, কাউকে দাবিয়ে রাখবার চেষ্টা করা মানে ভবিষ্যতে নিজেরই দমিত হবার পথ প্রশস্ত করা।

 সুখের বিষয়, আমেরিকায় লেকচারের পর শ্রোতাদের পক্ষে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার প্রথা আছে। আমেরিকার সাধারণ লোক সংবাদপত্র পাঠ করে তৃপ্ত নয়, মুখের কথায় সংবাদ শোনবার আগ্রহই যেন তাদের বেশী। যখন বললাম আমি ভাল ইংলিশ জানি না বলে কেউ যেন কিছু মনে না করেন, তখন অনেকেই বললেন, আপনি ভাল ইংলিশ জানেন না শুনে আমরা আনন্দিত। ভাল ইংলিশ জানলে সরল ভাষায় সত্য কথা বলতে সক্ষম হতেন না, যত সব বুদ্ধি খাটানো বজ্জাতি আর কূটনীতিপূর্ণ ভাষার বাহুল্যে আমাদের কর্ণকুহর পূর্ণ হত। আজ আমেরিকার লোক আর জিজ্ঞাসা করে না ভারতে শিশু-বিবাহের কারণ কি, হরিজন কি করে হল। যারা ফিউড্যালিজ্‌ম-এর উৎপত্তির ইতিহাস পাঠ করেছে এবং সম্রাট সৃষ্টির কারণ শুনেছে, তারাই বুঝেছে হরিজনের সৃষ্টি কেমন করে হয়। ভারতের সাম্রাজ্যবাদ একদা হীন স্তরে পৌঁছেছিল তার সংবাদ অনেকেই জানত না। শুনেছি মার্কস্‌-ও নাকি সে সম্বন্ধে বিশেষ কিছু বলে যান নি। আমেরিকার নিগ্রোদের অবস্থার সংগে অথবা দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতবাসীদের সংগে হরিজনদের তুলনাই হয় না। ভারতে হরিজনদের মনুষ্যত্ব থেকে বন্‌চিত করে রাখা হয়েছে এ কথা বলতে বাধ্য।

 আজ ডিট্রয়ের সাধারণ শিক্ষিত লোক ভারতের আধ্যাত্মিক সংবাদ জানতে চায় না। তারা জানতে পেরেছে, যে-দেশে মানুষকে মনুষ্যত্ব থেকে বন্‌চিত করে রাখা হয়েছে, সেদেশের বড় বড় তথ্যপূর্ণ আধ্যাত্মিকতা―আধ্যাত্মিকতাই নয়। তবে যারা ভারতের আধ্যাত্মিকতার সংবাদ শুনে বিভোর হয়, সংবাদপত্রে ভারতের আধ্যাত্মবাদের