পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



৪২
আজকের আমেরিকা

যুদ্ধ আরম্ভ হয়ে যায় তবে মহা বিপদে পড়বেন।” নূতন সাথীটিকে বলেছিলাম, “এ দেশ ছাড়বার আগে একদিন স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ড দেখতে হবে।” কথাটা তিনি বুঝতে পারেননি, কারণ স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ড সাধারণের কাছে শুধু ‘ইয়ার্ড' নামে পরিচিত। অনেক কথার পর যখন বুঝলেন তখন বললেন, “এতে আর কি, গেলেই হল।” এ যেন আমাদের দেশের যাত্রাগানের আসর, কষ্ট করে গেলেই যেখানে হ’ক ঠেসাঠেসি করে বসতে পাওয়া যাবেই। আমি ভাবছিলাম, আবেদন-নিবেদন করব, তারপর পাস আসবে, কত কি হবে, তারপর বলির পাঁঠার মত কাঁপতে কাঁপতে হয়তো মনের বাসনা পুরাতে হবে। নূতন সাথীটি একদিন ঘুম থেকে উঠেই বললেন, চলুন স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ড দেখতে যাই।

 বাসে যাওয়া ঠিক হল। অটোগ্রাফের বইটা সংগে করে নিলাম, উদ্দেশ্য যদি বড় কর্তার দেখা পাই তবে তার অটোগ্রাফ নিয়ে আসব। আমাকে স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ডের বাড়িটা দেখিয়ে দিয়েই আমার নূতন বন্ধু বললেন, “এখানে আপনি একা যান, তাতে ভাল হবে, নেটিভ সংগে থাকলে ওদের সন্দেহ হবে।” হন্‌হন্‌ করে একটা অফিসে গিয়ে টোকা দিলাম। প্রবেশের অনুমতি পেলাম। ঢুকে অভিপ্রায় জানাতেই শুনলাম, “আরে না মশায়, এটা নয়, পাশের দরজায় গিয়ে টোকা দিবেন।” একজন ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি বিদেশী। আসার উদ্দেশ্য?”

 “আসার উদ্দেশ্য, দেখা, এর বেশী নয়।”

 “এটা যে মিউজিয়ম নয় চিড়িয়াখানাও নয়, তা কি মহাশয় জানেন?

 “আজ্ঞে হাঁ, তা বেশ জানা আছে। ইংলিশ উপন্যাস পড়লেই স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ড-এর কথা পড়তে হয়। আমার ইচ্ছা হয়েছে, একবার স্থানটাকে দেখে আসি, তাতে উপন্যাসের পাতা উলটাতে সুবিধা হবে।”