লোক অনেক দেখেছে, অনেক সাহায্যও করেছে। মোল্লার প্রতিও তার দয়া হল এবং একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে কাপড় ছাড়িয়ে, খাইয়ে, ঘরের উত্তাপ বাংলা দেশের উত্তাপের মত করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। মোল্লা পরম আরামে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুম থেকে উঠেই মোল্লা বুঝলেন তার সাহায্যকারী গতরাত্রে তাকে প্রথম নম্বরের হারাম ‘সরাব’ খাইয়ে দিয়েছিল। এতে তার ভয়ানক রাগ হয়। প্রাণদাতা বন্ধুকে মোল্লা ‘কাফের’ বললেন তারপর তার ঘর পরিত্যাগ করলেন। পথে অনেক স্বজেলাবাসীর সংগে দেখা হল। কাফের ও কাফেরী কাজের কথা বলার সংগে অকপটে নিজের পলায়ন বৃত্তান্ত বর্ণনা করতে লাগলেন। এমন কি কোন্ জাহাজ হতে পালিয়ে এসেছেন তাও বলে দিলেন। মুসলমান ভাইএর কাছে সত্য না বললে পাপ হবে ভেবেই বোধহয় মোল্লা সাহেব সত্য কথা বলেছিলেন। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরেই যেদিন লোকটির একটু চৈতন্য হ’ল সেদিন বুঝলেন আমেরিকা থেকে বিদায় করে দেবার জন্য পুলিস তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে এবং এই বিপদের মূলে আছে তারই মুসলমান জাতভাই, সেইদিনই তার মনে এক বিদ্রোহী ভাবের সৃষ্টি হয়। তিনি নাম পরিবর্তন করলেন, দাড়ি গোঁফ মুণ্ডন করলেন, কাফেরী টুপি মাথার দিলেন, ইংলিশ শেখবার জন্য নৈশ বিদ্যালয়ে যেতে লাগলেন, নূতন ভাবের নূতন ফুল মোল্লার হৃদয়ে ফুটে উঠল। ফুলের ফল যে কি হয়েছে তার বর্ণনা পূর্বেই দিয়েছি।
নিউইয়র্ক নগরে পূর্বে এমন কয়েকজন ভারতীয় ছিল যারা এই ধরনের লোককে ধরিয়ে দিলে টাকা পেত কিন্তু নূতন আইন প্রচলিত হওয়ার এই ধরনের নীচ অপচেষ্টা বন্ধ হয়েছে। নিউইয়র্ক পৌঁছবার পর অনেক স্বদেশবাসী, মোল্লাসাহেবের মত তাদের পূর্ব অভ্যাস অনুযায়ী