পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
১০১

ভীষণ শব্দ হইল। মনে হইল, সমস্ত পৃথিবী যেন উল্‌টাইয়া যাইতেছে—চোখের সামনে রাশি রাশি আলাে—

 তারপর কি হইল জানি না। যখন চোখ চাহিলাম—আমার পাশে বসিয়া আছে লালতুই। বড় জলতৃষ্ণা; ফ্লাস্ক হইতে জল আমার মুখে ঢালিয়া দিল। এবােপ্লেনের শব্দ আর নাই—শত্রু চলিয়া গিয়াছে। বােমা পড়িয়াছিল কাছেই। আমার পাশে ছিল মহান্তি—বােমার স্‌প্লিন্‌টার্‌ লাগিয়া তাহার মৃত্যু হইয়াছে। আমি আশ্চর্য্যরকম বঁচিয়া গিয়াছি। আমাদের আরও দুইজন সঙ্গীর মৃত্যু হইয়াছে। তাহারা যেখানে শেলটার্ লইয়াছিল, ঠিক সেই জায়গায়ই বােমা পড়ে। তাহাদের দেহের চিহ্ন বিলুপ্ত হইয়াছে।

 মহান্তীর বাড়ী কটকের কাছে কি একটা গ্রামে। তাহার স্বদেশের দ্বার প্রান্তে আসিয়া সে শেষ শয্যা গ্রহণ করিল। কয়দিন এক সঙ্গে দিনরাত্রি কাটাইয়াছি; আজ তাহার মৃত্যুতে মন ভারাক্রান্ত হইল। তবু মনে হইল—মহান্তী বীরের মৃত্যু বরণ করিয়াছে। সজল নয়নে নীরবে তাহাকে সমাহিত করিলাম। দাহ করিলে সেই আগুন শত্রুর দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পারে, তাই ইচ্ছা সত্বেও তাহা করা গেল না।

৩১শে মার্চ ১৯৪৪: মণিপুর উপত্যকা:

 আজ আমরা মণিপুরের সমতল ভূমিতে প্রবেশ করিয়াছি। আমাদের সম্মুখে মণিপুরের রজধানী ইস্ফল।

 আজ মণিপুরের দক্ষিণ অংশ স্বাধীন। নেতাজী ও জাপ সেনানায়ক জেনারেল্ কাওয়াবে এই দুইজনের সম্মিলিত ঘােষণা প্রচারিত হইল। ভারতের এই মুক্ত অঞ্চল আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের