পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

শাসনাধীন হইল। কর্ণেল্ এ. সি. চ্যাটার্জি মুক্ত ভারতের গভর্ণর নিযুক্ত হইয়াছেন। মেজর কিয়ানি তাঁহার অধীনে দেশ শাসন করিবেন। বৃটিশের কবল হইতে মুক্ত অংশে যে সকল সম্পত্তি বা সমর সম্ভার পাওয়া যাইবে তাহা আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্ট পাইবেন।

 সকলের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার হইয়াছে। আমরা সত্যই নিজেদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করিতেছি—জাপানীদের ক্রীড়নক নই।

 আমার উপর আদেশ হইয়াছে বিষ্ণুপুরে যাইবার জন্য।

১লা এপ্রিল ১৯৪৪: বিষ্ণুপুর

 বিষ্ণুপুর মণিপুর উপত্যকায় প্রায় মাঝামাঝি; ইহার প্রায় মাইল খানেক উত্তরে লোগতাক্ হ্রদ।

 বিষ্ণুপুরে দেখিবার জিনিষ—নিত্যানন্দজীর মন্দির। মন্দিরটীর ছাউনি করগেট্ টীনের। সামনে একটী নাট মন্দির—সেটীরও খড়ের ছাউনি। এই মন্দির মণিপুর রাজ্যের দান হইতে চলে। মণিপুরের রাজারা বৈষ্ণব—বাঙলার বৈষ্ণব মতের প্রবর্ত্তক শ্রীচৈতন্যদেবের ভক্ত। ইহাদের তীর্থস্থান বাঙলা দেশের নবদ্বীপ। নবদ্বীপ হুগলী নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত একটী শহর। নিত্যানন্দ চৈতন্যদেবের একজন প্রধান শিষ্য ছিলেন।

 বিষ্ণুপুরের বাজারের কাছেই একটী টীলা রহিয়াছে। এই টীলার উপরে একটী প্রাচীন কেল্লার ভগ্নাবশেষ রহিয়াছে। ইহার মধ্যে একটী ইঁটের মন্দির আছে। এই জায়গাটার নাম শান্তিপুর।

 লালতুই জাতিতে কুকী। সে নাগা ও মণিপুরী ভাষা জানে বলিয়া আমার খুব সুবিধা হইয়াছে। লালতুই-এর সাহায্যে এক মণিপুরীর সঙ্গে পরিচয় হইল। ভদ্রলোকের নামটী মনে নাই—কি যেন সিং।