পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
১০৭

 কোহিমা আসামের নাগা পাহাড় জেলার প্রধান শহর। বেঙ্গল-আসাম রেলপথের ডিমাপুর ষ্টেশন হইতে ৪৬ মাইল দূরে। নাগা পাহাড়ের ডেপুটি কমিশনার এইখানে থাকেন। জি, টি, পাহাড় হইতে কোহিমা শহরে জল সরবরাহ হয়।

 মণিপুর রোড হইতে গৌহাটী মাত্র ১৫০ মাইল। বেঙ্গল ও আসাম রেলপথ ডিমাপুর হইতে লাম্‌ডিং দিয়া গৌহাটী গিয়াছে। ডিমাপুর হইতে সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকাও বেশীদূর নয়। পার্বত্য অঞ্চলের যুদ্ধে জয়লাভ হইলে বাঙ্‌লা দেশে আমাদের অগ্রগতি সহজ হইবে। তাই কোহিমা আমাদের চাই।

৩রা এপ্রিল ১৯৪৪: নাগা পাহাড়:

 নাগা পাহাড়ের মধ্য দিয়া চলিয়াছি। বাঝে মাঝে দেখিলাম এক নূতন ধরণের চাষ। পাহাড়ের গায়ের উপর সাজানো ডালা-কাটা ক্ষেত। পার্বত্য নদীর জল ক্ষেতের পাশ দিয়া প্রবাহিত হইতেছে; একটি ডালা কাটা ক্ষেতের জল উপ্‌ছাইয়া অন্য ক্ষেতে পড়িতেছে। পাহাড়ের গায়ে ধানের এরকম ক্ষেত আমি পূর্বে কখনো দেখি নাই। নাগাদের জুম ক্ষেত দেখিবার জিনিষ।

 পাহাড়ের উপর নাগাদের বস্তি। নাগা সর্দার আসিয়াছে আমাদের লইয়া যাইতে। এই বস্তি পূর্বেই অধিকৃত হইয়াছে। দূর হইতে ঐ বস্তি দেখা যায় না—চারিদিকে শাল বন।

 কাছে আসিয়া দেখিলাম—চারিদিকে বাঁশের বেড়া দিয়া ঘেরা। পাহাড়ের উপর এই পল্লীটি যেন একটী কেল্লা। ভিতরে খড়ের ছাওয়া অনেকগুলি কুটীর। একটা কুটীরের দরজার উপর বাইসনের শিং সাজানো রহিয়াছে; দেয়ালের গায়ে ঢাল, কাটারি ও বল্লম টাঙ্গানো।