পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

 লেফট্‌ন্যাণ্ট জ্ঞান সিং তাঁহার সৈনিকদের বলিতেন যে তিনি তাহাদেরই সঙ্গে মৃত্যুবরণ করিবেন। তিনি তাঁহার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিয়াছিলেন এবং জীবনে মরণে তাঁহার সঙ্গীদের সহিতই ছিলেন। ইতিহাস চিরদিন এই গৌরবময় বীরত্বের কাহিনীর সাক্ষ্য থাকিবে। লেফট্‌ন্যাণ্ট জ্ঞান সিং এবং তাঁহার জীবনের আদর্শ ছিল আমাদের মহান্ নেতা—নেতাজীর আদর্শ। তাঁহারা রণক্ষেত্রে যুদ্ধে প্রাণ দান করিয়া আমাদের অনুসরণের জন্য এক ঐতিহ্য সৃষ্টি করিয়া গিয়াছেন। এই সকল বীর পরাজয় কাহাকে বলে জানেন নাই। স্বাধীন ভারতে বংশপরম্পরা তাঁহাদের স্মৃতি ভারতবাসী পূজা করিবে এবং এইরূপ উচ্চ আদর্শে জীবন গঠন করিতে ভারতবাসীকে অনুপ্রাণিত করিবে।”


 এই বীরত্বের কাহিনী সত্যই অপূর্ব। আজাদ হিন্দ বাহিনীর সভ্য বলিয়া গর্ব অনুভব করিলাম।

২৩শে এপ্রিল ১৯৪৫:

 জাপানীরা আজ রেঙ্গুন ত্যাগ করিয়া যাইতেছে।

 রেঙ্গুনে ভারতবাসীর সংখ্যা অনেক। ১৯৪২ সালে ইংরেজরা যখন রেঙ্গুন হইতে পলায়ন করে, তখন তাহারা ইহাদের রক্ষার জন্য কোন ব্যবস্থাই করে নাই। তাহার ফলে বহু সহস্র ভারতীয় নরনারী ধনপ্রাণ হারাইয়াছিল। রেঙ্গুনের অবস্থা আবার হয়ত সেই রকম হইবে। ভারতীয়রা ভাবী লুঠতরাজ, খুন-জখমের ভয়ে আতঙ্কিত।

 আজও আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের মন্ত্রীসভার অধিবেশন হইয়াছিল প্রবাসী ভারতবাসীদের অসহায় অবস্থায় দস্যু তস্করের হস্তে সমর্পণ করিয়া তাঁহারা যাইবেন না; ইহাদের রক্ষার ব্যবস্থা করা হইবে।