পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
২১

২০শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪২:

 ঘরে চা আছে, কিন্তু দুধ ও চিনি নাই। অনেক কষ্টে উনান ধরাইয়া চা করিলাম। ভাগ্যে বিস্কুট সংগ্রহ করিয়া রাখিয়াছিলাম। কয়েকখানা বিস্কুট খাওয়া গেল।

 ভোর বেলায়ই বাহির হইলাম মং সাইনের সঙ্গে দেখা করিবার জন্য মাচেণ্ট্ স্ট্রীটে। দোকানের উপরেই সে থাকে। তাহার সঙ্গে দেখা হইল। সে-ও বেশী কিছু খবর রাখে না। আমায় বলিল —‘ভারতের লোকেরা দেশে পলাইতেছে। কিন্তু আমাদের তো এই দেশ—আমরা পলায়ন করিয়া কোথায় যাইব?’

 এই সময় নাথুভাই আসিয়া পড়িলেন। তিনি মোটরে আসিয়াছিলেন। বলিলেন—‘পেট্রল্ পাইতেছি না। যাহারা এসেন্সিয়াল্ শ্লিপ্ পাইয়াছে তাহাদের অসুবিধা হইতেছে না। আজ বর্মা গভর্ণমেণ্টের সেক্রেটারির অফিসে এ বিষয়ে কথা বলিবার জন্য যাইব।’

 নাথুভাই আমাকে বলিলেন—‘আসুন না, একটু ঘুরিয়া আসা যাক্।’ ভালোই হইল —আমিও তাহাই চাহিতেছিলাম। ডালহৌসি ষ্ট্রীটের অফিসে দুজনে গেলাম। চারিদিকে একটা নিস্তব্ধ সন্ত্রস্ত ভাব। তাঁহার পরিচিত এক সাহেবকে নাথু ভাই বলিলেন —‘সকলেই মোটরের জন্য ‘এসেন্সিয়াল্’ লেবেল পাইয়াছেন; আমায় একটা পাইয়ে দিন। বড় অসুবিধা হইতেছে।’

 সাহেব ম্লান হাসি হাসিয়া বলিলেন —‘আর ‘এসেন্সিয়াল্’ লেবেলের প্রয়োজন হইবে না। আমার জিনিষপত্র বাঁধা রহিয়াছে; আমরা রেঙ্গুন ছাড়িয়া যাইতেছি। আপনার মোটরে শীঘ্র সম্ভব রেঙ্গুন ত্যাগ করুন।’