পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
৪৯

পালনে উন্মুখ সৈনিক মাত্র থাকিতে চাই। আমার দিন ফুরাইয়া আসিতেছে—স্বাধীন ভারতের মাটিতে শেষ নিশ্বাস ফেলিতে চাই—’

 রাসবিহারী বসুর চোখের কোণে জল দেখিলাম। শ্রদ্ধায় মাথা নত হইয়া আসিল।


৪ঠা জুলাই ১৯৪৩:

 সুভাষচন্দ্র সিঙ্গাপুরে আসিয়াছেন।

 সুদুর প্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় স্বাধীনতা সঙ্ঘের যে সকল শাখা আছে, তাহাদের প্রতিনিধিগণের সভা আজ হইল। সভাস্থলে আমার পরিচিত মাত্র কয়েকজনকে দেখিলাম।

 রাসবিহারী বসু বলিলেন—‘আমি আজ ভারতীয় স্বাধীনতা সঙ্ঘের সভাপতিত্বের ভার সুভাষচন্দ্র বসুর উপর দিতেছি। আমি বৃদ্ধ হইয়াছি। এই কার্য্যে প্রয়োজন এমন একজন নেতার যিনি জাতিকে জয়যাত্রার পথে লইয়া যাইতে পারিবেন। সুভাষচন্দ্র সৌভাগ্যক্রমে আমাদের মধ্যে আসিয়াছেন। আজ হইতে তিনিই আমাদের নেতা। নেতাজীর নেতৃত্বে ভারতবর্ষ পরাধীনতার শৃঙ্খল হইতে মুক্তিলাভ করিবে।’

 জনতা নেতাজী সুভাষচন্দ্রের জয়ধ্বনি করিল।

 সুভাষচন্দ্র তাঁহার অভিভাষণে বলিলেন—ভারতের বাহিরে যে ৩০ লক্ষ ভারতবাসী আছেন তাঁহারা যদি সংঘবদ্ধ হন, তাহা হইলে তাঁহাদের চেষ্টায়ই ভারত স্বাধীন হইতে পারিবে। এই ত্রিশ লক্ষ ভারতবাসীকে লইয়াই স্বাধীন ভারতের গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠা করিয়া কাজ আরম্ভ করিতে হইবে। তিনি ঘোষণা করিলেন—অস্থায়ী আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের ব্যবস্থা শীঘ্রই করা হইবে।