পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
আজাদ হিন্দ ফৌজ

প্রভুত্ব করার চেষ্টা করে, তাহা হইলে আমরা তাহদের সহিতও লড়াই করিবে। এমন কি, এখনও জাপানীরা যদি আপনাকে এক চড় মারে, তাহা হইলে আপনি তাহাকে তিন চড় মারিবেন, কারণ আমাদের গভর্ণমেণ্ট জাপানী গভর্ণমেণ্টের সমপর্য্যায়ভুক্ত, আমরা কোনক্রমেই তাহাদের অধীন নয়। ভারতে পৌঁছিয়া যদি দেখি যে, কোনও জাপানী আমাদের দেশের নারীদের উপর অত্যাচার করিতেছে, তাহা হইলে প্রথম তাহাকে সতর্ক করিয়া দিতে হইবে এবং তাহাতেও সে সাবধান না হইলে আমরা তাহাকে গুলি করিব।”

 সাক্ষী অতঃপর বলে যে, তাহাদের ব্যাটালিয়ানকে টহলদারীর কার্য্যে নিযুক্ত করা হইয়াছিল। ৩১শে মার্চ্চ (১৯৪৪) সে সরিয়া পড়ে এবং বৃটিশ বাহিনীতে পুনরায় যোগ দেয়। সাক্ষী বলে, সুভাষচন্দ্র বসু যখন তাহাদের ব্রিগেডের সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করেন, তখন সাক্ষী তথায় উপস্থিত ছিল। সুভাষ বসু বলিয়াছিলেন যে, তাহারা স্বাধীনতার সৈনিক, তাহাদের উদ্দেশ্য হইতেছে ভারতকে স্বাধীন করা। সৈন্যদের বহু কষ্ট সহ্য করিতে হইবে, এমন কি, মৃত্যু বরণও করিতে হইতে পারে। যাহারা উহাতে পশ্চাৎপদ তাহারা সরিয়া দাঁড়াইতে পারে। সুভাষচন্দ্র তখন বলিয়াছিলেন, “আমরা ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করিতেছি, কাজেই অর্থ ও অন্যান্য সম্পদের দিক দিয়া আমাদের অবস্থা বিশেষ স্বচ্ছল নয়। আমাদের সামর্থ্যে যাহা কুলায় তাহাই আপনাদের দিতেছি। খাদ্য প্রভৃতির দিক দিয়া বেশি কিছু দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নহে। আপনাদিগকে অল্প খাদ্যের উপর নির্ভর করিতে হইবে।”

 হাবিলদার নবাবখান জেরার উত্তরে বলে যে, আজাদ হিন্দ ফৌজ যে পৃথিবীর যে কোন সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার সঙ্কল্প রাখে তাহা সে উহাতে যোগদানের পূর্ব্বেও জানিত; কিন্তু তাহার একান্ত সঙ্কল্প ছিল কোন রকমে সরিয়া পড়া, যুদ্ধ করা নয়।