পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২০
আজাদ হিন্দ ফৌজ

যে, আজাদ হিন্দ ফৌজে যে কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার আমরা করিয়াছি কোন ভাড়াটিয়া সৈন্য তাহা সহ্য করিতে পারিবে না। আমরা ভারতের স্বাধীনতার জন্যই সংগ্রাম করিয়াছি।

ক্যাপ্টেন সেহগলের বিবৃতি

 ক্যাপ্টেন সেহগল তাঁহার বিবৃতি প্রসঙ্গে বলেন— বৃটিশ সরকার ইচ্ছা করিয়াই আমাদের সহিত তাহাদের সকল সম্পর্ক ছিন্ন করিয়াছেন। সুতরাং যে সকল আনুগত্য দিয়া আমরা বৃটিশ সরকারের নিকট আবদ্ধ ছিলাম এখন হইতে আমরা সেই সকল আনুগত্য হইতে মুক্তিলাভ করিয়াছি। জাপানীরা আমাদিগকে ক্যাপ্টেন মোহন সিংহের হস্তে সমর্পণ করেন। ক্যাপ্টেন মোহনসিংহ তখন ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর সর্ব্বাধিনায়ক ছিলেন। আমরা তখন হইতে মনে করিতে আরম্ভ করিয়াছিলাম যে, যেহেতু বৃটিশ সরকার আমাদিগকে রক্ষা করিতে বিরত হইয়াছে কাজেই বৃটিশ সরকারী আমাদের নিকট হইতে কোন প্রকার অনুগত্য দাবী করিতে পারে না।

 অতঃপর ক্যাপ্টেন সেহগল ১৯৪২ সালের আগষ্ট মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত ঘটনাবলীর কথা উল্লেখ করিয়া বলেন যে ৮ই আগষ্ট স্বরণীয় আগষ্ট প্রস্তাব গৃহীত হইলে অল ইণ্ডিয়া রেডিয়োর দিল্লী কেন্দ্র ও বৃটিশ ব্রডকাষ্টিং কর্পোরেশন ভারতের বিভিন্ন ঘটনাবলী সম্পর্কে সম্পূর্ণ নীরবতা অবলম্বন করে। কিন্তু ভারতের কেন্দ্র এবং জাপ ও অন্যান্য অক্ষশক্তি নিয়ন্ত্রিত বেতার কেন্দ্রগুলি হইতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘটনাবলী এবং উহা দমনকল্পে বৃটিশ সরকারের অমানুষিক পীড়ন ও অত্যাচারের কথা স্বাধীনভাবে বহির্জগতে ঘোষণা করা হইতেছিল। এই বেতার কেন্দ্রগুলির ঘোষণা হইতে ইহা অনুমিত হইয়াছিল যে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের পর সরকার যে দমননীতির আশ্রয় লইয়াছিল এইবার ভারতে তাহা অপেক্ষা কঠোর দমননীতি চলিতেছে।