পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
আজাদ হিন্দ ফৌজ

বা সহ্য করিতেও পারিত না। এ কথা সত্য যে দল ত্যাগ করিবার জন্য এবং শত্রুর সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিবার জন্য তিনি (ধীলন) চারিজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করেন এবং তাহাদের বিচারার্থ প্রেরণ করেন।

 ক্যাপ্টেন ধীলন আরও বলেন, “এই কথা সত্য নহে যে আমার নির্দ্দেশে আমার লোকেরা ইহাদের গুলী করে। যেদিন যে সময়ে তাঁহাদের গুলি করা হইয়াছে বলা হইতেছে, সেই দিন আমি রোগে শয্যাশায়ী ছিলাম এবং আমার পক্ষে নড়াচড়া করাও অসম্ভব ছিল। প্রকৃতপক্ষে তাহাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ করা হয় এবং তাহাদের এই দণ্ড দেওয়া হয় নাই। আমি যাহা কিছু করিয়াছি, স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকার কর্ত্তৃক গঠিত সেনাবাহিনীর সদস্য হিসাবেই করিয়াছি এবং সেই হেতু ভারতীয় সামরিক বাহিনীর আইন অথবা ভারতীয় ফৌজদারী আইন অনুসারে আমার বিচার চলিতে পারে না। আমি যাহা কিছু করিয়াছি, ঐ সেনাবাহিনীর সদস্য হিসাবেই আমার কর্ত্তব্য করিয়াছি।

 আমি আরও জানিয়াছি যে, আইনের দিক হইতে সামরিক আদালতে আমার বিচার বে-আইনী। মহান উদ্দেশ্য লইয়াই আমি জাতীয় বাহিনীতে যোগদান করিয়াছিলাম। জাতীয় বাহিনীর সদস্য হিসাবে আমি অনেক যুদ্ধবন্দীকে অর্থ ও অন্যান্য দ্রব্যাদি দিয়া সাহায্য করিতে পারিয়াছি। জাতীয় বাহিনীর সৈন্যগণ সুদুরপ্রাচ্যে অবস্থিত ভারতীয়দের জীবন, ধন সম্পত্তি এবং সম্মান রক্ষা করিয়াছে। আমি বহু বেসামরিক ব্যক্তি এবং জাপানীগণ কর্ত্তৃক মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত বহু যুদ্ধবন্দীর জীবন রক্ষা করিয়াছি। আমার অনুরোধেই জাপানীরা বহুস্থলে অসামরিক ব্যক্তিদের উপর বোমাবর্ষণ হইতে বিরত থাকে। সুদূর প্রাচ্যের অধিবাসীরা আজাদ হিন্দ ফৌজের সেবা কার্য্যে মুগ্ধ হইয়া কোটি কোটী টাকা দান করিয়াছে। তীব্র স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ অস্থায়ী ভারত সরকারের তহবিলে সুদূর প্রাচ্যের ভারতীয়গণ স্বেচ্ছায় কোটী কোটী টাকা দান করিয়াছে।