পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ

দুই বৎসর পর তাঁহার ইউরোপ ভ্রমণের ইচ্ছা হয়। পূর্ব-পশ্চিমের জ্ঞানবিজ্ঞানের একটা সমন্বয় তৃষ্ণা তাঁহার প্রাণকে উতল করিয়া তুলিয়াছিল। পশ্চিমের যাহা কিছু ভাল, তাহা গ্রহণ করিতে এবং ভারতের সনাতন সত্যের প্রচার করিতেই তিনি বাহির হইয়াছিলেন। এইজন্য তিনি ১৮ বৎসর বয়সে স্ত্রীকে সঙ্গে লইয়া য়ূরোপ ভ্রমণে বাহির হন।

 য়ূরোপে নানা দেশ ভ্রমণ করিবার সময় তিনি নানাপ্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি দেখিলেন যে, যাহারা স্কুল-কলেজে পড়ে তাহাদের সে পড়া ব্যর্থ হয় না। য়ূরোপের শিক্ষার সুন্দর ব্যবস্থা দেখিয়া তাঁহার মনে হইল দেশে গিয়া সেই আদর্শে বিদ্যালয় স্থাপন করিবেন এবং সেখানে পুঁথিগত ও কারিগরী শিক্ষার ব্যবস্থা। তাঁহার এই প্রেরণার ফলেই বৃন্দাবনের প্রেমমহা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত। তাঁহার পত্নীর নাম প্রেমমহা। তাঁহারই নামানুসারে এই বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়।

 ১৯০৯ সালের মে মাসে তিনি তাঁহার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য প্রভৃতি দেশের বরেণ্য জননায়কবর্গকে আমন্ত্রণ করিয়া এক সভার অনুষ্ঠান করেন। সভার সভাপতি ছিলেন পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য। সভায় তিনি বলেন যে, তাঁহার একটি পুত্র হইয়াছে এবং সেই পুত্র হইল এই বিদ্যালয়। তিনি এই বিদ্যালয়ের জন্য তাঁহার সমস্ত সম্পত্তি দান করিতে চাহেন। তাঁহার সমস্ত সম্পত্তি দান করিতে সকলে তাঁহাকে নিষেধ করিলেন। অবশেষে তিনি তাঁহার সমস্ত সম্পত্তি দান না করিয়া প্রায় দশ লাখ টাকা মূল্যের পাঁচখানা গ্রাম বিদ্যালয়কে দান করেন। সঙ্গে সঙ্গে বৃন্দাবনের রাজপ্রাসাদও বিদ্যালয়কে দিয়া দিলেন। পরে নানা বাধাবিঘ্ন আসিতে পারে—এইজন্য যাহা দান করিলেন, তাহা বিদ্যালয়ের নামে রেজিষ্টারী করিয়া দিলেন। ইহাই প্রেমমহা বিদ্যালয় স্থাপনের ইতিহাস।

 বিদ্যালয় স্থাপন হইতেই তিনি বিদ্যালয়ের কর্ণধার ছিলেন এবং অবৈতনিক-