পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১৪৯

এই লীগের উদ্দেশ্য ছিল বলিয়া তাঁহার ধারণা হইয়াছিল। সাক্ষী স্বাধীনতা লীগের প্রচার-সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারীর শেষে তিনি লীগের সভাপতি শ্রীরাসবিহারী বসুর সহিত সাক্ষাৎ করেন। শ্রীযুক্ত বসু সাক্ষীকে বলেন যে, স্বাধীনতা লীগের প্রধান অফিস সিঙ্গাপুরে যত শীঘ্র সম্ভব স্থানান্তরিত হইবে। ১৯৪৩ সালে এই স্থানান্তরিত করিবার কার্য্য শুরু হয় এবং সাক্ষীও ব্যাঙ্ককে অবস্থিত তাহার লোকদের এই সম্পর্কে উপদেশ দেন।

 সাক্ষী আরও বলেন যে, থাইল্যাণ্ড, মালয়, সিঙ্গাপুর ইন্দোচীন প্রভৃতি স্থানে স্বাধীনতা লীগের শাখা ছিল। ইহার প্রতিস্থানেই লীগের সভ্য ছিল। লীগের সভ্য সংখ্যা ছিল ৭৫০০০০ জন।

 সাক্ষী ১৯৪৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত একখান ইস্তাহার পেশ করেন। উক্ত ইস্তাহারে বলা হয় যে ‘পূর্ব্ব এশিয়ার ভারতীয়গণ আজ আর বিদেশী শাসনের অধীন নয়। তাহাদের নিজস্ব আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। ভারতীয়দের এই বিষয়ে সচেতন করার জন্য ও প্রত্যেক ভারতবাসীকে আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য বলা হয়। ২৩২৫৬২ জন ভারতীয় এই আনুগত্য শপথ গ্রহণ করে। ভারতীয়দের নিকট হইতে অর্থ সংগ্রহ করিয়া এই সরকারের ব্যয় নির্ব্বাহ করা হইত। এই সমুদয় অর্থ রেঙ্গুনে প্রতিষ্ঠিত আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্কে রাখা হইত। এই ব্যাঙ্কের জনৈক ডিরেক্টর মিঃ দীননাথ এক বিবৃতিতে জানাইয়াছিলেন যে ১৯৪৪ সালের ৩১শে জুলাই পর্য্যন্ত এই ব্যাঙ্কে ছিল ১৫,৪৫৩,১৪৪ ডলার এবং ডলারের মূল্য যুদ্ধের পূর্ব্বে ছিল এক টাকার কিছু বেশী। ইহা ব্যতীত সোনা রূপা পয়সা প্রভৃতিতেও প্রচুর অর্থ পাওয়া গিয়াছিল।

 সাক্ষী বলেন যে, সুভাষচন্দ্র বসু জাতীয় বাহিনীর অধিনায়ক হন এবং পরে তিনি জাতীয় বাহিনীর সর্ব্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। একটি প্রশ্নের উত্তরে সাক্ষী রলেন যে জাতীয় বাহিনীতে যোগ দেওয়া না দেওয়া সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাধীন ছিল।