পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১৬৯

অবস্থার পট-ভূমিকায়ই ইহার বিবেচনা হইবে। সুতরাং আন্তর্জজাতিক আইন অনুসারে বুদ্ধাবসানে কখনও এই অফিসার-ত্রয়ের বিচার চলিতে পারে না।

 শ্রীযুত দেশাই তাঁহার সওয়াল জবাবের শেষাংশে আসামীত্রয়ের বিরুদ্ধে আনিত নরহত্যার অভিযোগগুলি অস্বীকার করেন। শ্রীযুত দেশাইয়ের মতে সরকার পক্ষের সাক্ষীরা আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত হত্যার অভিযোগগুলি সপ্রমান করিতে পারে নাই। তিনি আরও বলেন যে, অফিসারত্রয়ের বিরুদ্ধে আনিত এই বিচার সম্পূর্ণ বে-আইনী। এই উপলক্ষে তিনি প্রিভিকাউন্সিলের এক সিদ্ধান্তের নজীর উল্লেখ করিয়া ওজস্বিনী ভাষায় বক্তৃতা করেন এবং সকল সময়েই পরাধীন জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের অধিকার সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “রাজার প্রতি প্রজার আনুগত্যের কথা মূল্যহীন। আইনগত আনুগত্য কখনও চিরকাল বজায় থাকিতে পারে না। উক্তরূপ আনুগত্য চিরকাল বজায় রাখিতে গেলে পরাধীন জাতিকে কোন কালে স্বাধীনতা লাভ করিতে হইবে না।”

 শ্রীযুক্ত দেশাই বলেন যে, সংক্ষেপে বলিতে গেলে আসামীদের বিরুদ্ধে ২টি অভিযোগ করা হইয়াছে,—রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, এবং হত্যা করা ও হত্যাকার্য্যে সাহায্য করা। কয়েকজন দলত্যাগীর বিচার হইয়াছিল, তাহাদিগকে গুলী করিয়া হত্যার আদেশ দেওয়া হয় এবং তাহাদিগকে গুলী করিয়া হত্যাও করা হয়। আসলে আসামীদের বিরুদ্ধে এই আদালতে একটি অভিযোগই আছে। কারণ, হত্যা ও হত্যাকার্য্যে সাহায্য করার অপরাধকে প্রথম অভিযোগের অংশ বলা যাইতে পারে। আমার এইরূপ বলার হেতু এই যে, রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধের অভিযোগ আনা হইলে গুলী করিয়া হত্যা প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগও প্রথম অভিযোগের অন্তর্ভুক্ত করা সম্পূর্ণরূপে সম্ভব। আমার মতে পৃথক অভিযোগের উল্লেখ অবান্তর।