পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
আজাদ হিন্দ ফৌজ

তিন পয়সা ও এক আনার। এই ডাক টিকিট আজাদ-হিন্দ-সরকার কর্ত্তৃক প্রচারিত হইয়াছিল। ডাক টিকিটে দিল্লীর মুঘলযুগের পুরাতন দুর্গ প্রাকারের ছবি অঙ্কিত এবং “দিল্লী চলো”—এই বাণী লেখা ছিল। ডাক টিকিটের উপরে —“স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকার” ইহাও ছাপ মারা ছিল। উক্ত প্রবন্ধে আরও বলা হইয়াছে যে, ইম্ফল বিজয়ের পরে এই স্বাধীন ভারতের গভর্ণমেণ্টর ইম্ফল ডাকটিকিটগুলি যখন মূল্যহীন হইয়া পড়ে; তখন এই ডাক টিকিটের বহু পাতা পোড়াইয়া ফেলা হয়। আজাদ হিন্দ গভর্নমেণ্টর নিজস্ব সামরিক ও অ-সামরিক গেজেট ছিল। এই সব ঘটনাবলী হইতে ইহাই প্রমাণিত হয় যে, আজাদ-হিন্দ গভর্ণমেণ্ট এক বিশেষ অবস্থার মধ্যে গঠিত হইয়াছিল এবং স্বদেশের পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জ্জনের উদ্দেশ্যেই তাহারা যুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছিলেন। শ্রীযুত দেশাই এখানে আইনগত প্রশ্ন বিস্তৃতভাবে বলেন যে, যুদ্ধ সাধারণতঃ মিউনিসিপ্যাল আইনের চক্ষে অন্যায়। কিন্তু দুইটি কিংবা তদতিরিক্ত জাতিসমূহ যখন যুদ্ধ ঘোষণা করে তখন ইহার ব্যতিক্রম ঘটে। এখানে একটি দৃষ্টান্ত ধরা হউক যে, একটি জার্ম্মাণ দুই তিনটি বৃটিশকে হত্যা করিয়াছিল। এখন যুদ্ধাবসানে যদি তাহাকে লণ্ডনে দেখা যায়, তাহা হইলে কি তাহাকে নরহত্যার অপরাধে অভিযুক্ত করা হইবে? আমি বলিব, তাহা কখনও হইতে পারে না। কারণ, ইহা অতি সহজ ও সাধারণ কথা যে, যুদ্ধকালীন সেই ব্যক্তি তাঁহার প্রয়োজনীয় কর্ত্তব্য কার্য্য সমাধা করিয়াছিল মাত্র। বর্ত্তমান পৃথিবীতে জাতিতে জাতিতে যুদ্ধ অনিবার্য্য। সুতরাং আন্তর্জ্জাতিক আইন অনুসারে যুদ্ধের পর কোন সৈনিককে হত্যার অপরাধে কখনও অভিযুক্ত করা যাইতে পারে না। আন্তর্জ্জাতিক আইন অনুসারে দুইটি জাতি পরস্পর যুদ্ধ ঘোষণা করিলে যুদ্ধপরবর্ত্তী সময়ে যুদ্ধের অংশ গ্রহণকারী কোন সৈনিককে বিচার করা যাইতে পারে না। অবশ্য এখানে যুদ্ধাপরাধীদের কথা স্বতন্ত্র। অতঃপর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৭১ ধারায় এই বিচার চলিতে পারে না। উক্ত