পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮০
আজাদ হিন্দ ফৌজ

 আজিকার দিনে আন্তর্জ্জাতিক সম্পর্ক এমন অবস্থায় পৌঁছিয়াছে যে, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সঠিক সংজ্ঞা নিরূপণ করা বড় কঠিন। কোন বিশেষ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই ইহা প্রযোজ্য নহে। সমগ্র বিশ্বব্যাপী এই অবস্থা। কাজেই সমস্ত রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই উপরোক্ত আইন প্রয়োগ করা যাইতে পারে। ইহা রাজনীতি নহে, ইহা আইন। যে কোন স্থানেই যদি স্বদেশের স্বাধীনতা অর্জ্জনের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়, তাহা হইলে উহা আধুনিক আন্তর্জ্জাতিক আইনের অবশ্যই সমর্থন যোগ্য। উপরোক্ত যুক্তি অনুসারে ইহাই বুঝা যায় যে, যদি ভারতীয় সৈনিকেরা ইংলণ্ডের স্বাধীনতা রক্ষা করিতে জার্ম্মাণী ও জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে যাইতে পারে তাহা হইলে ইংলণ্ড এবং অন্যান্য দেশের হাত হইতে ভারতের স্বাধীনতা অর্জ্জনের জন্য ভারতীয় সৈনিক কেন যুদ্ধ করিতে পারিবে না? সুতরাং আজাদ হিন্দ ফৌজের যুদ্ধ ঘোষণা সম্পর্কে কোনরূপ প্রশ্নই উঠিতে পারে না। ইহা সম্পূর্ণ আইনানুগতই হইয়াছিল। প্রাচীন আইনানুসারে ইহা হইয়াছিল যে স্বাধীন এবং সার্ব্বভৌম অধিকার সম্পন্ন রাষ্ট্র না হইলে যুদ্ধ ঘোষণা করিতে আইনতঃ সমর্থ নহে। কিন্তু বর্ত্তমান আন্তর্জ্জাতিক আইনানুসারে ইহা সম্পূর্ণরূপে বাতিল হইয়া গিয়ছে। সম্পূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র না হইলেও পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিতে পারে। গবর্ণমেণ্ট ও জনগণের মধ্যেও যুদ্ধ হইতে পারে। এ আদালতের নিকট আমার বিশেষ আবেদন এই যে, আপনারা যাঁহারা বৃটিশ ইতিহাস পাঠ করিয়াছেন, তাঁহারা নিশ্চয়ই প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ড, ম্যাগনাকার্টার স্বাক্ষর এবং দ্বিতীয় জেমসের রাজত্বের ঘটনাবলীর সহিত বিশেষভাবে অবগত আছেন। এই সব ঐতিহাসিক ঘটনাবলী কি আমার যুক্তিকে সমর্থন করে না?

 বিচারকদের সম্বোধন করিয়া শ্রীযুত দেশাই বলেন, আমিও আপনাদের ঐরূপ করিতে অনুরোধ করিতেছি। ইহার মধ্যে ব্যক্তিগত সম্মান অসম্মান বা কাহার কি হইল না হইল সে প্রশ্ন অবান্তর। অনুগ্রহপূর্ব্বক আপনারা মনে