পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৬
আজাদ হিন্দ ফৌজ

জেনারেল আইসেনহাওয়ারের অধিনায়কত্বে সংগ্রাম করে, তখন বৃটিশ বাহিনীকে আমেরিকা বাহিনীর পুত্তলিকা বলা চলে না। শ্রীযুত দেশাই বলেন, সরকার পক্ষ লেঃ নাগকে দিয়া প্রমাণ করিতে চাহিয়াছিলেন যে আজাদ-হিন্দ-ফৌজ একটি সুগঠিত বাহিনী ছিল এবং এই বাহিনী যুদ্ধ করিয়াছে।

 “আসামীদের পক্ষ হইতে আমিও ঠিক এই কথাই প্রমাণ করিতে চাহিয়াছিলাম। হয়ত সরকার পক্ষ তখন ইহা বুঝিতে পারেন নাই। লেঃ নাগ বলিয়াছেন জাপানীরা এবং আজাদ-হিন্দ ফৌজ দুইটি মিত্র শক্তি হিসাবেই সংগ্রাম করিয়াছে। এই মৈত্রী ন্যায় কি অন্যায় সেই প্রশ্ন অবান্তর। একমাত্র বিচার্য্য প্রশ্ন এই যে, আজাদ হিন্দ ফৌজ একটি পূর্ণাঙ্গ গঠিত বাহিনী হিসাবে যুদ্ধ করিয়াছে কি না। যদি এই কথা বলা হয় যে ভারতের স্বাধীনতা লাভ ছাড়া আজাদ-হিন্দ-ফৌজের অন্য উদ্দেশ্য ছিল, তাহা হইলে তাহা মিথ্যা বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। প্রথম হইতে শেষ পর্য্যন্ত সরকারী সাক্ষীগণ বলিয়াছেন সে, আজাদ-হিন্দ-ফৌজের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের স্বাধীনতা লাভ। যাহাদের পক্ষ আমি সমর্থন করিতেছি তাহাদের এবং আমি যে দলভুক্ত তাহার সম্মান রক্ষার্থ আমি বলিতেছি যে সরকার পক্ষ যাহাই বলুক না কেন, তাহারা জাপানীদের হাতের পুতুল ছিল না।”

 শ্রীযুক্ত দেশাই ১৭৭৬ সালের আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণাপত্র পাঠ করিয়া প্রতিপন্ন করেন যে, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উদাত্ত আহ্বান আসিলে রাজানুগত্য জনসাধারণের নিকট শ্রেয়ষ্কর বিবেচনা হইতে পারে না। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি ও ইংলণ্ডের প্রধান মন্ত্রীও অনুরূপ ঘোষণনাই করিয়াছেন। তিনি ১৭৯৭ সালের প্রাচীন ইংরাজী নজীরের উদাহরণও দেন যে, যে সকল জাতি যখন অধীন এবং দুর্ব্বলকে রক্ষা করিতে অসমর্থ হয় সম্ভবতঃ তখনই দুর্ব্বল জাতি স্বাধীনতা লাভ করে। যাহারা জাতীয় বাহিনী গঠন করিয়াছিল