পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১৯৭

 আসামী পক্ষ হইতে অত্যাচার করা সম্পর্কে সাক্ষ্যকে বাদ দিবার জন্য দরখাস্ত করা হইয়াছে। এ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন যে, ঐ দরখাস্তকে আমল দেওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন যে, সরকার পক্ষ হইতে এই জন্য ঐ সমস্ত সাক্ষ্য উপস্থিত করা হইয়াছে যে সরকার পক্ষ দেখাইবেন কেমন করিয়া আসামীরা অন্যান্য যুদ্ধ বন্দীদের রাজানুগত্য পরিত্যাগ করিয়া রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবার জন্য আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করাইতে চেষ্টা করিতেন এবং কি অবস্থায় সৈন্য সংগ্রহ করিতেন। স্যার নসিরওয়ান বলেন যে, আসামী পক্ষের সমস্ত বক্তব্য বিবেচনা করিয়া আদালতই অবশ্য স্থির করিবেন যে, (ক) যুদ্ধ বন্দীদিগকে আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করাইবার জন্য বাস্তবিকই কোন অত্যাচার করা হইত কি না (খ) আসামীগণ এই অত্যাচার করিবার কথা অবগত ছিলেন কি না এবং জানিয়াও ভারতীয় যুদ্ধ বন্দীদের আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করিবার জন্য পীড়াপীড়ি করিতেন কি না, এবং (গ) আজাদ-হিন্দ ফৌজে যোগদান না করিলে তাঁহারা ভীতিদর্শন করিতেন কি না। বহু সাক্ষ্য দ্বারা ইহা প্রমাণিত হইয়াছে যে, ভারতীয় বাহিনীর লোকজন, এমন কি অফিসাররা পর্য্যন্ত যদি আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করিতে অস্বীকার করিতেন তবে তাহাদের উপর অকথ্য অত্যাচার করা হইত। অতঃপর স্যার নসিরওয়ান সরকার পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য হইতে বহু অংশের উল্লেখ করেন। বহু ব্যক্তি যে আজাদ-হিন্দ ফৌজ ত্যাগ করিয়া যাইতেন ইহা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সুযোগ পাইলেই আজাদ হিন্দ ফৌজের লোকজন, এমন কি অফিসাররা পর্য্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ ত্যাগ করিয়া যাইতেন। স্যার নসিরওয়ান বলেন, এইরূপ দল ত্যাগ করা হইতে ইহাই অনুমিত হয় যে, আজাদ-হিন্দ ফৌজের অধিকাংশই বাধ্য হইয়া ইহাতে যোগদান করিত। আরও বহু বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত হইয়াছে যে, বন্দী শিবিরের ভারপ্রাপ্ত আজাদ-হিন্দ ফৌজের লোকজন এবং অফিসাররা অমানুষিক অত্যাচার করিতেন।