পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১০
আজাদ হিন্দ ফৌজ

যুদ্ধ ঘোষণার অপরাধ হয় এবং ইংলণ্ডের আইনানুসারে রাজদ্রোহ অপরাধে অপরাধী হয়। আসামীগণের পক্ষে ইহা মুক্তি সংগ্রাম হইলেও ফরিয়াদী পক্ষের মতে রাজানুগত্যের ভান করিয়া রাজার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার অপরাধ হইয়াছে এবং আসামীগণ বাস্তবিকই সংগ্রাম করিয়াছে।

 আসামী পক্ষ হইতে বলা হইয়াছে যে, রক্ষা করিতে অসমর্থ হইয়া বৃটিশ কর্ত্তৃপক্ষ ভারতীয় সৈন্যগণকে সিঙ্গাপুরে জাপানীদের হস্তে যুদ্ধবন্দী হিসাবে সমর্পণ করিলে অকস্মাৎ তাহারা ভারতের স্বাধীনতা লাভরূপ সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং কেবল তাহাই নহে জাপানীদের হাত হইতেও স্বদেশ রক্ষার সমস্যা তাহাদের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হয়। সেই জন্য তাহারা অস্ত্র গ্রহণ করিতে বাধ্য হয়। তাহাদের মতে উক্ত কার্য্য আন্তর্জ্জাতিক আইনসম্মত এবং ঐরূপ অবস্থায় রাজানুগত্য অস্বীকার করিবার অধিকার তাহাদের আছে। তাহাদের বিরুদ্ধে রাজদ্রোহ অথবা রাজানুগত্য ভঙ্গ প্রভৃতি যে কোন অভিযোগই আন। হউক না কেন তাহারা সম্পূর্ণ নির্দ্দোষ।

 এই সম্পর্কে আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণার নজীর উল্লেখ করা হয়। সেক্ষেত্রে আমেরিকার অধিবাসীরা স্বীয় দেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য গ্রেট বৃটেনের রাজার প্রতি আনুগত্য বিসর্জন দিয়াছেন। এই দৃষ্টান্ত দেখাইয়া যুক্তি দেখান হয় যে, অস্থায়ী ভারত সরকার আমেরিকার মতই স্বাধীনতা ঘোষণ। করিয়াছিল এবং আসামী যখন সেই সরকারের প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করিয়াছে, সেই সময় হইতেই সে রাজার প্রতি তাহার আনুগত্যের পাশ হইতে মুক্ত হইয়াছে। আসামীর পক্ষ সমর্থনে আরও বলা হয় যে, একজন যুদ্ধবন্দী স্বকীয় দায়িত্বে দেশের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করিতে পারে নাই বলিয়া কোন প্রশ্ন উঠে না এবং এমতাবস্থায় আনুগত্য ভঙ্গের অপরাধে দোষী হওয়ার প্রশ্নও উঠিতে পারে না।

 কিন্তু আসামী পক্ষ আন্তর্জ্জাতিক আইনের নজীর তুলিয়া যে দাবী করিতেছে