পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
২১১

তাহা সর্ব্ববাদীসম্মত নহে। বৃটিশ ভারতে এমন কোন আইন নাই যাহাতে রাজদ্রোহ অপরাধ বলিয়া গণ্য হয় নাই। অপর পক্ষে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ জনিত সমস্ত আইনই বিধিবদ্ধ করা হইয়াছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধই মুল অপরাধ এবং রাজানুগত্য ভঙ্গজনিত অপরাধকেই রাজদ্রোহ বলিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে।

 মিঃ কর্ণেল কেরিন বলেন,—“রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা সম্পর্কে আসামীত্রয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হইয়াছে তাহার মর্ম্মার্থ হইল—রাজানুগত্যেব নিকট গভীর অপরাধ করা। ইহাকে কখনও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ বলিয়া গ্রহণ করা যাইতে পারে না। আসামীত্রয় শুধু রাজানুগত্যের প্রতি বিশ্বাসভঙ্গ করিয়াছিল। আপনারা ইহা বিবেচনা করিয়া দেখিবেন। কর্ণেল কেরিন আরও বলেন, আন্তর্জ্জাতিক আইন এই আদালতে একেবারে বাতিল হইয়াই যাইবে এই বলিয়া এই আদালত গঠিত হয় নাই বলিয়া আমি মনে করি। তবে আপনারা হয়ত আমার বিবেচনার ঠিক বিপরীত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারেন। কর্নেল কেরিন বলেন যে তিনি আন্তর্জ্জাতিক আইনের পটভূমিকা ব্যতীত তিনি এখন আসামীত্রয়ের অভিযোগগুলি সম্পর্কে বিবেচনা করিবেন। তিনি বলেন, আপনারা যদি উভয়পক্ষের যুক্তিতে আন্তর্জ্জাতিক আইনের ব্যাখ্যা শুনিয়া আসামীদের অনুকূলে মত প্রকাশ করেন তাহা হইলে অবশ্য অন্যান্য বিষয়গুলি বিবেচনা না করিলেও পারেন।

 অতঃপর জজ এডভোকেট কর্ণেল কেরিন সমস্ত অভিযোগের সারমর্ম্ম বিবৃত করেন। তিনি বলেন—আসামীত্রয়ের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ হইল যে তাহারা ভারতীয় সামরিক আইনের ৪১ ধারা অনুযায়ী তাঁহারা রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছিল। সামরিক আইনের এই ধারার সহিত ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনের ১২১ ধারারও মিল রহিয়াছে। এখানে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি। সরকার পক্ষের