পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
২৪১

মোহন সিংএর হস্তে অর্পণ করে। এই সময় বৃটিশ সরকারের পক্ষ হইতে লেঃ হাণ্ট কোনপ্রকার প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেন নাই। ইহার পর হইতে বন্দীগণ জেনারেল মোহন সিং এর অধীনেই ছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে অনেককে শাস্তি দেওয়া হইয়াছে এবং ইহাও সত্য যে, কোন কোন ক্ষেত্রে বেত মারা হইয়াছে। জেনারেল পার্সিভ্যালের আদেশে বৃটিশ যুদ্ধ বন্দীদেরও বেত মারা হইয়াছে।

 ব্রহ্ম জাতীয় বাহিনীর উল্লেখ করিয়া ক্যাঃ সেহগল বলেন, উক্ত বাহিনী ১৫ হইতে ২০ হাজার ভারতবাসীর হত্যা ও সম্পত্তি লুঠের জন্য দায়ী। এই সমস্ত অপরাধ সম্বন্ধে বৃটিশ কর্ত্তৃপক্ষ কি বলেন, তাহা আমি জানিতে চাই। আমি জানিতে চাই সামরিক কর্ত্তৃপক্ষ এই অপরাধের শাস্তির জন্য কোন ব্যবস্থা অবলম্বন করিয়াছেন কি না।

 ১৯৪৪ সাল এবং ১৯৪৫ সালের ছয় মাস ধারিয়া লাল কেল্লায় আবদ্ধ আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈন্যগণের উপর অমানুষিক নির্য্যাতন করা হইয়াছে। নিষ্ঠুর ব্যবহারের জন্য যদি কাহাকেও শাস্তি পাইতে হয় তবে তাহা লাল কেল্লায় বৃটিশ সামরিক কর্ম্মচারী লেঃ ওয়ারেনেরই প্রাপ্য। কুঠুরীতে আবদ্ধ আমার সহকর্ম্মীদের প্রহার করিবার শব্দ আমি নিজ কানেই শুনিয়াছি। লেঃ ওয়ারেন নিজ হাতেই প্রহার করিয়াছিলেন।

 আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈন্য ও সেনাপতিগণকে ব্রহ্মদেশে অনেক সময় সমস্ত দিন রৌদ্রের মধ্যে রাখিয়া দেওয়া হইত। অনেক সময় ৪০ হইতে ৬০ ঘণ্টা পর্য্যন্ত তাহাদিগকে কোনও রকম পানীয় দেওয়া হইত না। একজন সৈন্য জলের অভাবে মৃত্যু বরণ করিতে বাধ্য হইয়াছিল।

 জার্ম্মান সীমান্তের আজাদ ফৌজীদের কথা উল্লেখ করিয়া ক্যাঃ সেহগল বলেন যে, বৃটিশ সামরিক কর্ম্মচারীর আদেশে ফরাসী সৈন্যগণ বহু আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈন্যদের গুলী করিয়া হত্যা করিয়াছে।”