পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
২৫১

দ্বারা ইঁহাদিগকে নির্ম্মম ভাবে প্রহার করা হয়, এবং তাঁহাদের জিনিষপত্রও লুণ্ঠন করা হয়। এমন কি কয়েকজনকে জাহাজ হইতে ছুঁড়িয়া জেটিতে ফেলিয়া দেওয়া হয়।

 ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ এবং মন্ত্রিসভার লোকদের ১৫ই জানুয়ারী এবং আজাদ-হিন্দ ফৌজের লোকদের ২৯শে জানুয়ারী সিঙ্গাপুর জেলে লইয়া যাওয়া হয়।

 বৃটিশ সামরিক কর্ত্তৃপক্ষ আজাদ হিন্দ সরকারের মন্ত্রীদের প্রতি যে আচরণ করিয়াছেন তাহা অত্যন্ত অপমানজনক। সিন্ধিয়া ষ্টীম নেভিগেশণ কোম্পানীর জাহাজখানির অফিসারগণ কিন্তু “জয়হিন্দ” ধ্বনি উচ্চারণ করিয়া ইঁহাদের সম্বর্দ্ধনা করেন।

আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠাদিবস উদ্‌যাপনের পরিণাম

 সিঙ্গাপুরের ভারতীয়গণ স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকারের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্‌যাপনের আয়োজন করেন। প্রভাতে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা সকল ভারতীয়ের গৃহে এবং ব্যবসাক্ষেত্রে উত্তোলন করা হয়। আজাদ হিন্দ ফৌজের বিদ্ধস্ত সমর-স্মৃতি স্তম্ভের ধ্বংসাবশেষের উপর জনগণ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। বালক সেনা এবং বালিকা সেনার সভ্যও সভ্যারা জাতীয় পতাকা হস্তে সহরের প্রধান রাস্তাগুলি পরিভ্রমণ করিয়া আজাদ হিন্দ ফৌজের সমরস্মৃতি স্তম্ভের নিকট উপস্থিত হয়। স্মৃতিস্তম্ভের ধ্বংসাবশেষের উপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন কালে জনতা স্তব্ধ হইয়া দাঁড়ায় এবং সকলে মিলিয়া জাতীয় সঙ্গীত গাহিতে থাকেন। শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে দুই মিনিট কাল সকলে নিস্তব্ধ হইয়া থাকেন।

 এই সময় দুইজন বৃটিশ অফিসার— ঐস্থানে উপস্থিত হইয়া—অরুমুগম, আনন্দ সিং এবং কৃষ্ণ স্বামীকে গ্রেপ্তার করে। কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া তাঁহাদিগকে পরে ছাড়িয়া দেওয়া হয়।