পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
আজাদ হিন্দ ফৌজ

হইত না এবং যদি বা খাদ্য দেওয়া হইত তাহা অত্যন্ত কদর্য্য ছিল। তাহাদিগকে মাটিতে শোয়াইয়া প্রায় ৫ ফুট লম্বা ও ১ ইঞ্চি পুরু লাঠি দিয়া প্রহার করা হইত। তাহাদিগকে পিপীলিকাপূর্ণ জমিতে বিছানা ও বস্ত্র ছাড়া শয়ন করিতে বাধ্য করা হইত। এইভাবে ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর ভারতীয় সৈন্যরাই যুদ্ধবন্দীদের উপর নির্যাতন চালায়। এক সময় তাহারাও যুদ্ধবন্দী ছিল।

 এডভোকেট-জেনারেল ক্রানজি-ক্যাম্পের ঘটনা বিবৃত করিয়া বলেন যে, ১৯৪১ সালের আগষ্ট মাসে ৫।১৪ পাঞ্জাব রেজিমেণ্টের জমাদার ফতে খান ও ঐ রেজিমেণ্টেরই শিঙ্গারা সিং ১৪ জন সশস্ত্র শিখ সহ ক্রানজিক্যাম্পে আসেন। ঐ স্থানে প্রায় ৩ শত মুসলমান যুদ্ধবন্দী ছিল। তাহাদিগকে ভারতীয় জাতীয় রাহিনীতে যোগ দিতে বলা হইলে তাহারা এই বলিয়া অস্বীকার করে যে, তাহারা তাহাদের প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিবে না। তখন তাহাদের উপর গুলী চালান হয় এবং কয়েকজন মারা যায়। শিঙ্গারা সিং-এর সমভিব্যাহারী জনৈক শিখও নিহত হয়। তাহারা চলিয়া গেলে তিন জন জাপানী অফিসার ও তিন জন ভারতীয় জাতীয় বাহিনী অফিসার আসিয়া যুদ্ধবন্দীদিগকে বুঝান যে, ভারতীয় জাতীয় বাহিনীতে যোগদানের আদেশ জাপানী গভর্ণমেণ্টের নিকট হইতে আসিয়াছে এবং এই আদেশ তাহাদিগকে পালন করিতে হইবে। মুসলমান সৈন্যরা অস্বীকৃত হইলে তাহাদিগকে পৃথক কয়েদ শিবিরে লইয়া গিয়া নির্যাতিত করা হয়।

 ১৯৪২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিদাদরী ক্যাম্পেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে। যে সকল গুর্খা সৈন্য ভারতীয় জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকার করে, তাহাদের উপর গুলী ও বেয়নেট চালান হয়। এমন কি হাঁসপাতালে পর্য্যন্ত আহত সৈনিকদিগকে ভারতীয় জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিতে বলা হয়।

 ১৯৪২ সালের ডিসেম্বর মাসে মোহন সিং ও জাপানীদের মধ্যে গোলযোগ আরম্ভ হয়। মোহনসিংকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং যে সকল যুদ্ধবন্দী আজাদ