পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
৮৫

অধিকাংশ মুসলমান ফৌজই জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকার করে। হিন্দু, শিখ ও কতিপয় মুসলমান ফৌজ জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিয়াছিল। তিনি আরও বলেন— আমি বরাবরই জাতীয় বাহিনীতে যোগদানের বিরুদ্ধে ছিলাম। আমি বরাবরই আমার উর্দ্ধতন কর্ম্মচারী এবং সৈন্যদের ইহাতে যোগ না দিতে বলিয়াছি এবং জাতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচারকার্য্য চালাইয়াছি।

 ইহার পর সাক্ষীকে নিসুন শিবির হইতে বিদাদরী শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু সেখান গিয়াও জাতীয় বাহিনী সম্বন্ধে তাঁহার মনোভাবের কোন পরিবর্ত্তন হয় নাই। সেনাবাহিনীর যে সমস্ত মুসলমান সৈন্য জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকার করে তাহাদের ১৯৪২ সালের জুলাই মাসের কোন এক সময় বন্দী শিবিরে লইয়া যাওয়া হয়। ঐ শিবিরে প্রায় চার হইতে ৫ শত সৈন্য ছিল। তাহাদের খানাতল্লাসী করিয়া সঙ্গের জিনিষপত্র এবং ভারতীয় বাহিনীর ‘ব্যাজ’ কাড়িয়া লওয়া হয়। সাক্ষী বলেন যে অফিসারদের নন কমিশনড এবং অন্য পদমর্য্যাদাসম্পন্ন—পৃথক করিয়া পৃথক পৃথক ‘সেলে’ বন্দী করিয়া রাখা হয়। তাহারা বিদাদরী শিবিরে পৌঁছিবার পরদিন সকাল বেলা একজন সুবেদার, একজন হাবিলদার, একজন ঝাড়ুদার এবং ছয়জন সিপাহী তাঁহাদের শিবিরে আসে এবং সাক্ষী ও অন্য এগার জনকে পৃথক করিয়া লইয়া যায়। ভাইসরয়ের কমিশনড অফিসার এবং সিপাহীদের সকলের হাতেই পাঁচ ফিট লম্বা এবং দুই ইঞ্চি পুরু লাঠি ছিল। তাহারা ঐ লাঠির সাহায্যে সাক্ষী এবং অনুসঙ্গী এগারজনকে প্রহার আরম্ভ করে। ঝাড়ুদারটি সাক্ষীকে প্রহার দিতে আরম্ভ করে এবং কুড়ি পঁচিশ ঘা খাইবার পর সাক্ষী অজ্ঞান হইয়া পড়ে। তাহার চৈতন্য ফিরিলে সে দেখে যে বাকী এগার জনও সেইখানে পড়িয়া আছে।

 সাক্ষী এবং অন্যান্যদের রাস্তায় মাটি ভর্ত্তি করিয়া জোর কদমে প্রায় তিনশ গজ দূরে লইয়া যাইতে হইত। যাহারা জোর কদমে চলিতে