পাতা:আজ কাল পরশুর গল্প.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আ জ কা ল প র শু র গ ল্প

এতক্ষণ পরে ঘনশ্যাম মুখ খোলে। জমায়েতে টুঁ শব্দ নেই কারো মুখে মেয়েদের ফিসফিসানি ছাড়া, তবু নেতাদের সভার কলরব থামাবার ভঙ্গিতে দু’হাত খানিকক্ষণ তুলে রেখে সে বলে, ‘যাক্, যাক্। ভাই সব, আজকালকার দিনে অত সব ধরলে মোদের চলে না। আমি বলি কি, কথাটা যখন উঠেছে, রামপদ’র ইস্তিরি নামমাত্র একটা প্রাচিত্তির করুক, চাপা পড়ে যাক ব্যাপারটা।’

বনমালী ফুঁসে ওঠে, ‘কিসের প্রাচিত্তির? দোষ করেনি তো প্রাচিত্তির কিসের?’

গিরি গলা চেরে, ‘মোকেও প্রাচিত্তির করতে হবে নাকি তবে?’

তারপর বিশৃঙ্খলার মধ্যে জমায়েত শেষ হয়। বনমালীর বৌ চোখ-ভরা জল নিয়ে মুক্তার ঝাপসা মুখখানি দেখে তার চিবুক ধরে চুমো খেতে গিয়ে গালটা টিপে দেয়। কয়েকটি স্ত্রীলোক মুখ বাঁকিয়ে আড়-চোখে মুক্তার দিকে চাইতে চাইতে চলে যায়। শঙ্কর নিঃশব্দে মোড়া থেকে উঠে যেমন অযাচিত ভাবে এসেছিল তেমনি অযাচিত ভাবে বিদায় না নিয়ে বনমালীর সঙ্গ ধরে।

বলে, ‘যদি খুঁজে পেতে এনে দিই, ফিরিয়ে নেবে ভাই?’

বনমালী আশ্চর্য্য হয়ে যায়।—‘ফিরে নেবে না তো খুঁজে মরছি কেন?’

একটা কথা বলতে গিয়ে শঙ্কর থেমে যায়। ফিরিয়ে আনার মতো অবস্থা যে সকলের থাকে না, মন এমন বিগড়ে যায় যে ঘরসংসার আর যোগ্য না তার, সেও যোগ্য থাকে না ঘরসংসংসারের। কিন্তু কি হবে ও-কথা বলে বনমালীকে? মহামারীতে লক্ষ লক্ষ

২১