পাতা:আজ কাল পরশুর গল্প.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আ জ কা ল প র শু র গ ল্প

বোন মালতী বিপিন সামন্তের পিছু পিছু ছ’কুনের ছাউনীর দিকে চলতে থাকে গর্ব্বে ফাটতে ফাটতে, তাই তাকিয়ে দ্যাখে মানদা ঘরের বেড়ার ফোকর-জানালায় চোখ রেখে। দাসু কামারের মেয়েটা আজ ওদের সঙ্গে যাচ্ছে। ও-ও তো রাতের ছায়া ছিল কাল রাত্রি তক্, সারাদিন ঘরে লুকিয়ে থেকে চুপি চুপি ঘাটে আসত দুটােচারটে বাসন আর কলসী নিয়ে। ধোপদুরস্ত সাদা থান কাপড়টা কোথা পেল ও সাধবা মাগী?

শন ক্ষেতের রঙ্গমঞ্চে রঘু একটু মস্করা করে বেনারসী পরা মালতীর সঙ্গে, তা দেখে যেন যাত্রাদলের মেয়ে সাজা ছেলে সখীর মতো ভড়কে গিয়ে থমকে দাঁড়ায় রাণুর হাপুসকাঁদা ষোল বছরের কাঁচা মেয়ে। এদিক ওদিক চায়। হঠাৎ পিছুফিরে হাঁটতে থাকে হনহনিয়ে, ফাঁদ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে হরিণী যেন পালাচ্ছে যেদিকে পালান চলে। ইস্! কি সাদা ওর পরনের ধুতিটা।

‘অ বিন্দু! দাঁড়া।’ রঘু ডাকে।

বিন্দী দাঁড়ায়। ফাঁদছাড়া হরিণী তো নয় আসলে, মানুষের মেয়ে। দাঁড়িয়ে মুখ ফেরায়। বলে, ‘কাল-কাল যাব সামন্ত মশায়। বড় ডর লাগছে আজ।’

বেনারসী পরা মালতী বলে, ‘ইহিরে, খুকী মোর ডর লাগছে। দে তবে, দে কাপড় খুলে। খোল্ কাপড়। যাবি তো চ’, নয় কাপড় খুলে দিয়ে ঘরে যা।’

বৈকুণ্ঠ বলে, ‘ঝাঁপ ভাঙ্গবো ছোট বৌ।’

মানদা বলে, ‘ভাঙ্গো-মাথা ভাঙ্গব তোমার আমি।’

৮২