পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লইয়া, আর কিছু লইয়া নয়। ভাবিতাম--তবে ঈশ্বর ছাড়া এত বস্তু ব্যাপার রহিয়াছে ইহাদের সহিত। তবে কি মানুষের কোন ধর্ম্মমূলক সম্বন্ধ নাই ? বঙ্কিমবাবুর বাসায় প্রতি রবিবার আমরা এই সকল আলোচনা করিতাম। সেই সময় পূজনীয় শ্রীশশধর তর্কচূড়ামণির নাম শুনা গেল। ইন্দ্রনাথকে বলিয়া বঙ্কিমবাবু চূড়ামণি মহাশয়কে একদিন আপনি বাসায় আনাইলেন। চূড়ামণি মহাশয় ধর্ম্মকথা কহিলেন। তিনি যেমন বলিলেন-ধূ-ধাতু হইতে ধর্ম্ম, অর্থাৎ যাহা ধারণ করে তাহাই ধর্ম্ম-অমনি আমার সকল সংশয় দূর হইল, বিশ্বে যাহা কিছু আছে সকলহ ধর্ম্মের অন্তর্গত দেখিলাম, বিশ্বে যাহা কিছু আছে বিশ্বনাথ হইতে তাহা স্বতন্ত্র রাখিয়া দিলে বিশ্বনাথকে পাওয়া যায় না বুঝিলাম, কারণ বিশ্ব তাহা হইলে আমাদিগকে রক্ষা না করিয়াই বিনাশ করে ; যাহা এত অন্বেষণে পাই নাই তাহ । পাইলাম। আমার আনন্দের সীমা রহিল না । পুর্বে যখন দেবদেবীতে বিশ্বাস ছিল না। ইংরাজী ভাবাপন্ন ছিলাম তখন আমাদের সবই মন্দ মনে হইত। ঠিক মনে at R, cre at St. ii (7. Betheme Society are rivet High Educatio: in India নামক একটী প্রবন্ধ পাঠ করিয়াছিলাম । তাহাতে আমাদের জাতিভেদ প্রণালীর নিন্দা করিয়াছিলাম । কিন্তু তাহার পর শাস্ত্রের কথা শুনিয়া এবং সামাজিক জীবন পর্য্যবেক্ষণ করিয়া ঐ প্রণালীর যৌক্তিকতা বুঝিয়েছিলাম। বুঝিয়া অক্ষয়চন্দ্রের "নবজীবনে’ জাতীয় চরিত্র বর্ণভেদ প্রণালী শীর্ষক একটা প্রবন্ধ লিখিয়াছিলাম। উহা পড়িয়া বঙ্কিমবাবু বলিয়াছিলেন-“আমিও জাতিভেদটাকে অত্যন্ত জঘন্য জিনিস মনে করিতাম, কিন্তু তোমার প্রবন্ধ পড়িয়া আমার মত উল্টাইয়া গিয়াছে।” নবজীবনের ঐ প্রবন্ধটী সৎপ্রণীত ত্রিধারা নামক পুস্তকে সন্নিবিষ্ট করিয়াছি। বঙ্গদর্শন, প্রচার, নবজীবন, নব্যভারত, ভারতী, সাহিত্য প্রভৃতি মাসিক পত্রে যাহা লিখিয়াছিলাম তাহার প্রায় সমস্তই ক্রমে ক্রমে পুস্তকাকারে শকুন্তলাতত্ত্বে, ফুল ও ফলে, ত্রিধারায়, হিন্দুত্বে, সাবিত্রীতত্ত্বে প্রকাশিত করিয়াছি। কঃ পন্থাঃ শ্রীমান গোবিন্দলাল দত্তের সাবিত্রী লাইব্রেরীর অধিবেশনে পাঠ করিয়াছিলাম। হিন্দু সভ্যতা এবং ইউরোপীয় সভ্যতার মধ্যে কোনটী মানুষোচিত, উহাতে এই প্রশ্নের আলোচনা করিয়াছি। বর্তমান বাঙ্গালা সাহিত্যের প্রকৃতি নামক একটা প্রবন্ধ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে পাঠ করিয়াছিলাম। পরিষৎ তখন রাজা বিনয়কৃষ্ণের বাটীতে ছিল এবং দ্বিজেন্দ্রবাবু উহার সভাপতি ছিলেন । কি জন্য উহা পরিষৎ পত্রিকায় সন্নিবিষ্ট হয় নাই বলিতে পারি না। আমি উহা পুস্তকাকারে প্রকাশিত করিয়াছি। সাধু ও অসাধু দুই প্রকার বাঙ্গালা ভাষার মধ্যে বঙ্গের সকল স্থানের সুবিধা ও উন্নতির জন্য এবং বাঙ্গালীর সর্বপ্রকার একতা বর্ধনার্থ সাধু ভাষায়ই অবস্থানীয়, এই প্রবন্ধে এই মত স্থাপন করিবার চেষ্টা V)