পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বপ্নের কথা দুই এক জনকে বলিয়াছিলাম। ইহার কয়মাস পরে, ঠিক সেইরূপ ঘটনা জাহাজই আমি স্বপ্নে দেখিয়া ছিলাম। স্বপ্ন মিথ্যা আমি কখনই বলিতে পারি না । ১২৭৯ সালের ১লা বৈশাখ 'বঙ্গদর্শন’ প্রকাশিত হইল। সেই বৎসর দুর্গোৎসবের পর, মাতাঠাকুরাণীর বায়ু রোগ বুদ্ধি পাওয়ায়, আমি ওকালতি ছাড়িয়া দিলাম । বহরমপুরে আর গেলাম না, বাড়ীতেই রহিলাম । ৮০ সালের বৈশাখ হইতে বঙ্গদর্শনের দ্বিতীয় খণ্ড বঙ্কিমবাবুদিগের বাড়ী বঁটালপাড়া হইতে প্রকাশিত হইতে লাগিল । সঞ্জীববাবু কঁাটাল পাড়াতেই প্রেস স্থাপিত করিলেন । ১২৮৪ সালের ১১ই কান্ত্রিক অর্থাৎ আমি বাড়ী বসিয়া থাকিতে আরম্ভ করার এক বৎসর পরে, “সাধারণী” প্রকাশিত হইল। আর সেই মাস হইতে, আমি “বঙ্গদর্শনের’ প্রাপ্ত গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত সমালোচনা করিতে লাগিলাম । “সাধারণী”ও “বঙ্গদর্শন যন্ত্রালয়ে’ কঁাটাল।” পাড়ায় ছাপা হইতে লাগিল ৷৷ ৮১ সালের শ্রাবণ মাসে, আমি চুচুড়ার কদমতলায়, আমাদের বাড়ীর সংলগ্ন, আমাদের আর একটি বাড়ীতে, ‘সাধারণী যন্ত্রালয়’ স্থাপনা করিয়া সাধারণী প্রকাশ করিতে লাগিলাম। ঐ সালের অগ্রহায়ণ মাসে পিতার “ঋতুবর্ণন” প্রকাশিত হইল। ঋতুবর্ণনের উৎসর্গপত্র অতি বিচিত্র বলিয়া এই স্থলে উদ্ধৃত করিলাম ;- প্রাণোপম প্রিয় পুত্র অক্ষয়চন্দ্র ! তুমি জান, আমাকে রাজকার্য্য-নিবন্ধন সময়ে সময়ে বিরল-বান্ধব স্থানে অবস্থান করিতে হইয়াছিল ; সেই সেই স্থানে অবকাশ কাল কথঞ্চিৎ সুখে যাপন কারণার্থ, পন্থ রচনা করিতে চেষ্টা করিতাম, সেই চেষ্টার ফলস্বরূপ এই “ঋতুবর্ণন” অভিহিত গ্রন্থখানি হইয়াছে । গ্রন্থখানি সামান, এজন্য কোন বড় লোককে উৎসর্গ না করিয়া, ইহা তোমাকেই অৰ্পণ করিলাম । তুমি সস্তান, পিতৃদত্ত সম্পত্তি ভাল হউক, বা ভাল না হউক, তোমাকে আদরের সহিত গ্রহণ করিতেই হইবে । "মগ্রহায়ণ : শ্রীগঙ্গাচরণ সরকার । Y RYY ৮২ সালের বৈশাখে বঙ্কিমবাবু ‘বঙ্গদর্শনে’ ‘ঋতুবর্ণনে’র সমালোচনা করিলেন । পুলিলেন ঋতুবর্ণন রিয়ালিসটিক । বৃত্রসংহার আইডিয়ালিসটিক । তঁহার কথা তিনিই বলুন না কেন ? “সম্পূর্ণতা-প্রাপ্ত বর্ণনা-কাবোর উদ্দেশ্য, স্বরূপ বর্ণনা ! জগং যেমন আছে, छैिक শুক্র হার প্রকৃত চিত্রের সৃজন করিতে-এ শ্রেণীর কবিয়া যত্ন করেন । আর এক শ্রেণীর কবিদিগের উদ্দেশ্য অবিকল স্বরূপ বর্ণনা নহে । তঁহারা