পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তঁর আর এক বন্ধুকে লিখিতেছেন-“আমি ইন্দোর সহর দেখিলাম। বিশেষ কিছু দ্রষ্টব্য নাই। রাস্তা ঘাট পাথরে বাধানো, ভাল স্ক্রিপ্রঙের গাড়ীর পক্ষে একেবারে আচল। ঘিঞ্জিী সহর, বাজার যেমন আমাদের বড় বাজার, সরু সরু গলী, ময়লা ধূলিময়, ঠিক আমাদেরই পুণ্য নগরীর অনুরূপ। রাজপ্রাসাদে গিয়া সমস্ত দেখিলাম ; ছোট ছোট ঘর, সঙ্কীর্ণ সিড়ি, ঠিক যেন একটি কয়েদখানা । দেখিবার মধ্যে সুবিখ্যাত অহল্যাবাইয়ের সমাধি মন্দির, প্রস্তর নির্ম্মিত, নানা মুক্তি খোদিত, ইহার কারুকার্য্য বাস্তবিক সুন্দর ও প্রশংসনীয়। আমার ভ্রমণকালে আমার দেশীয় লোকেরা আমাকে যে আদব যত্ন করিয়াছে তাহা কখনও ভুলিব না।” (To Jadub Kissen Sing.) আগ্রা, ৫ই জানুয়ারি ১৮৫৭ “ইন্দোর হইতে যখন তোমাকে পত্র লিখি তখন স্বপ্নেও ভাবি নাই যে আগ্রায় আসিয়া আমি এরূপ রোগাক্রান্ত হইয়া পড়িব । আসল কথা হচ্ছে, এ সকল স্থানে ব্যাড়াইবার আরাম নাই, রাস্ত ঘাট দুৰ্গম, গাড়ীর ঝাকানি, আবহাওয়াও পীড়াদায়ক। এই শরীর লইয়া কোন রকমে যে আগ্রায় পৌছিয়াছি, হাত পা ভাঙ্গিয়া যায় নাই, এই আশ্চর্য্য ! সাত দিন সর্দি কাশীতে শয্যাগত ছিলাম-গলার আওয়াজ বন্ধ, অস্ত্র করিতে হইল। এখন একটু ভাল হইয়াছি, কল্যই কলিকাতার অভিমুখে রওয়ানা হইব। আগ্রায় আসিয়া তাজ দেখিয়াছি—আমার যে এতটা পথের কষ্ট-এত অর্থব্যয় এই তাজ দর্শনে তাহা সার্থক বোধ হইতেছে।” ১৮৫৪ সালে ছোটকাকার বিবাহ হয় । যখন তিনি ‘তস্থী শু্যামা শিখরিদশনা” যশোহরের একটি বালিকার পাণিগ্রহণ করেন তখন আমার বয়ঃক্রম ১২ বৎসরঘটনাটি আমার বেশ মনে পড়ে। বিবাহের পর তাহার বৈলাতিক বন্ধুরা তাঁহাকে পত্র দ্বারা অভিনন্দন করেন । Duke of Inverness লিখিতেছেন- “আমি ইংলণ্ডে তোমাকে অতি বালক দেখিয়াছিলাম-ইহার মধ্যে তোমাকে বিবাহিত বলিয়া কিছুতেই মনে করিতে পারি না। তুমি যে আমাদের দৃষ্টান্তে এক পত্নী লইয়াই সংসার করিবার মানস করিয়াছ, ইহা বড়ই আহিলাদের বিষয়, কেননা বহু বিবাহে গৃহ অশান্তির আলয় হইয়া উঠে, নিদান আমার তাই বিশ্বাস।” বিবাহের অল্পকাল মধ্যেই তিনি সরকারী চাকরী গ্রহণ করেন ও কি কারণে পদত্যাগ করলেন তাহ পূর্বেই বলা হয়েছে। কর্ম্মে ইস্তফা দিয়েই দেশভ্রমণে বাহির হন- কিন্তু সেই ভ্রমণে তীর শরীর শোধরান দূরে থাক তিনি ক্লিষ্ট ক্লান্ত রোগগ্রস্ত হয়ে বাড়ী ফিরে আসেন। এই যে তঁাকে রোগে ধরল। তার হস্ত হ’তে তিনি আর মুক্ত হতে পারলেন না। এই জীর্ণ শীর্ণ রুগ্ন শরীরে তঁর শেষ জীবন অতিবাহিত হয় । ষ্ঠার উপর দিয়ে কত ডাক্তারী হাকিমী চিকিৎসা পরীক্ষিত হ’ল কিন্তু কিছুতেই কিছু Je