পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বভূপিসীর পরিচারিকা হয়। আমার বড়পিসীর ছেলেমেয়েরা মাতার গর্ভ হইতে চিস্তাদাসীর ক্রোড়েই পড়িয়াছেন ও তাহার ক্রোডেই প্রতিপালিত হইয়াছেন। আমিও মাতুলালয় হইতে আসিয়া চিন্তার ক্রোড়ে আশ্রয় পাই । আমার জ্ঞানের সঞ্চার হইলে দেখিতাম যে চিন্তাই আমাদের হত্রী-কত্রী । আমরা তাহকে দাসী বলিয়া মনে করিতাম না, চিন্তা দিদি বলিয়া ডাকিতাম। চিন্তা সকল কার্যেহ পঢ়ি ছিল । বন হইতে কাঠ কাটিয়া আনিত, জাল পোলো প্রভৃতি লইয়া গ্রামের প্রাস্তবস্ত্রী খাল হইতে মাছ ধািবয়া আনিত, গো দোহন করিত, বাজার হাট করিত, ধান ভানিত, সর্বোপরি আমাদের প্রতি কেহ কোনো অত্যাচার কবিলে বাঘিনীর ন্যায় তাহার ঘাড়ে গিয়া পন্ডিত। চিস্তার প্রতাপে পড়ার লোক সশঙ্কিত থাকিত । চিন্তা এমন সুস্থ ও সবল ছিল যে প্রাতে উঠিয়া ১৮। ১৯ মাইল হঁটিয়া আমার মাতুলালয়ে তত্ত্ব লইয়া যা ওয়া তাহাব পক্ষে কিছুই কষ্টকর ছিল না । সেই শৈশবকালে চিন্তা দাসী বোধ হত্য আমাদিগকে বলিয়া দিয়াছিল যে, আমাদের বাটীর সম্মুখস্থ নারিকেলের গাছ বৃত্রিকালে দেশ ভ্রমণ করে । এক ডাকিনী তাহাতে চাপিয়া বেডইতে যায়। ইহাতে আমাদের শিশুদলে মহা ভয় হইয়াছিল, পাছে আমাদের নরিকেল গাছ হারাইয়া যায় ; ;ক জানি, ডাকিনী যদি কোথাও BBBDS BDS S DBtB GK BBBD S ttBBS SBBDBDB KLD D0KD DB রাখিলে ডাকিনীতে গাছ লাইতে পারে না । আমার স্মরণ তৈয়, আমরা কয়েকজন শিশুতে মিলিযা সন্ধ্যার পূর্বে গাছের গায়ে গজাল মারিয়া রাখিয়াছিলাম । বাংলা স্কুলের ছাত্র। গবর্ণর জেনারেল লর্ড কার্ডিঞ্জের রাজত্বকালে দেশে কতকগুলি আদর্শ বাংলা স্কুল স্থাপিত হয় । তাহার একটি আমাদের গ্রামে স্থাপিত হইয়াছিল । কঁচড়াপাড়ানিবাসী শ্যামাচরণ গুপ্ত নামক একজন ভদ্রলোক তাহার প্রথম পণ্ডিত নিযুক্ত হন । মা পাঠশালের গুরুমঙ্গাশয়ের প্রতি বিরক্ত হইয়া আমাকে পাঠশালা ছাড়াইয়া সেই স্কুলে ভর্তিত করাইয়া দিয়াছিলেন । সেখানে গিয়া আমি ‘স্কুল বুক সোসাইটি’ব প্রকাশিত বর্ণমালা ও মদনমোহন তর্কালঙ্কারের নবপ্রকাশিত শিশুশিক্ষা পড়িতে লাগিলাম । মদনমোহন তর্কালঙ্কারের শিশুশিক্ষায় অনেক পাঠ মিত্রাক্ষর ও কবিতার মতো ছিল, সেগুলি আমার বড় ভালো লাগিত, দুই-একবার পড়িলেই মুখস্থ হইয়া যাহত। ইহাতে বর্ণপরিচয়ের ব্যাঘাত হইতে বটে, কিন্তু আমি বর্ণ মিলাইয়া মুখে মুখে কবিতা করিতে পারিতাম । গ্রামে ইংরাজী স্কুল। হার্ডিঞ্জ বাংলা স্কুল স্থাপনের পরেই আমাদের গ্রামে এক ইংরাজী স্কুল স্থাপিত হইয়াছিল। হরিদাস দত্ত নামে জমিদারবাবুদের বাড়ির একজন যুবক তখন দেশে শিক্ষাবিস্তার বিষয়ে বড়ই উৎসাহী ছিলেন। ইনি অল্পদিন হইল R