পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* 'ই' কি 'না'! বল, আমি আর কিছু শুনতে চাই না।” আমি। ই সাহেব, সেখানে খুলিব । সাহেব । তবে আমার এখানে খুলিবে না কেন ? আমি । আপনি কারণ শুনবেন না, তবে আমি কি করব ? কারণটা শুনিলে বলিতাম যে, বাঙালী ভদ্রলোকের বৈঠকখানাতে জাজিম পাতা থাকে, সকলেই জুতা খুলিয়া প্রবেশ করে, সুতরাং আমাকেও সেই ভাবে - প্রবেশ করিতে হইত। কিন্তু সাহেব যখন আমার কথাতে কান দিলেন না, তখন বাধ্য হইয়া মৌনাবলম্বন করিলাম, এব” তাহাকে অভিবাদন করিয়া ঘরের বাহির হইলাম । সাহেব। আবার ডাকিলেন, “ছোকরা, শোনে! শোনো ’ আমি আবার ঘরে প্রবেশ কথ্রিলাম । সাহেব । তুমি একটা কথা শুনেছি, ‘নিজের মান যদি চাও অপরের মান আগে द्रश् ?' আমি । সাহেব, ও খুব ভালো কথা! , আমি অনেক দিন শুনেছি। এই বলিয়া আবার তঁহাকে অভিবাদন করিয়া ত্বরিত পদে গৃহ হইতে বাহির হইয়া কলেজের দিকে ছুটিলাম । বড়মামা বৈকালে আমাকে ডাকাইয়। সমুদয় কথা শুনিলেন । বলিলেন, “উড়ো সাহেব যে তোমাকে জুতা খোলাইতে পারেন নাই, ইহাতে আমি বড়ই সস্তুষ্ট হইয়াছি ; তুমি আমার ভাগিনার মতো কাজ করিয়ােছ।” তৎপরে তিনি সোমপ্রকাশের জন্য ইহার একটি বিবরণ লিখিয়া দিতে বলিলেন । আমি “উড়ে। সাহেব ও চটিজুতা।” হেডি° দিয়া ইহার একটি বিবরণ লিখিয়া দিলাম। পরবর্তী সোমবারে “ফলন সাহেব ও চটজুতা’ হেডিং দিয়া বড়মামা সেটি বাহির করিলেন, এবং বেচারি উড়ো সাহেবের উদ্দেশে অনেক উত্তম মধ্যম তিরস্কারের ব্যবস্থা করিলেন। পরে শুনিতে পাইলাম, উড়ে। সাহেব তাহ পাঠ করিয়া আমার প্রতি হাড়ে হাড়ে চটিয়া গেলেন এবং আপিসের বাবুদিগকে বলিলেন, “এই ছেলে কলেজ থেকে বাহির হইয়া যদি কর্মপ্রার্থী হয়, আমাকে জানাইও। আমি উড়ো সাহেবের ন্যায় সদাশয় পুরুষের বিষ নয়নে পড়িয়া গেলাম ভাবিয়া বড় দুঃখ হইল। তিনি অতি সদাশয় মানুষ ছিলেন বলিয়া এ ঘটনা তাহার মনে রহিল না, কারণ, পরবর্তী চাকরীর সময়ে আমি যখন ভবানীপুরের সাউথ সুবার্বন স্কুল হইতে হেয়ার স্কুলে আসি, তখন তিনিই উদ্যোগী হইয়া আমাকে আনিয়াছিলেন। তখন তঁহার কর্মচারীরা তঁহার আদেশমতো পূর্বের কথা তাহার নিকট ব্যক্তি করেন নাই, করিলে কি দাড়াইত জানি না। We