পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাকে, কাজের শক্তি বাড়ে, ইত্যাদি । আমার যেন স্মরণ হয় যে, তাহার প্ররোচনায় একদিন কি দুইদিন একটু-একটু সুরাপান করিয়াছিলাম। কিন্তু কি আশ্চর্য জগদীশ্বরের কৃপা ! তৎপরেই মনে মহা নিৰ্বেদ উপস্থিত হইল। প্যারীচরণ সরকার মহাশয়কে, মাতুল মহাশয়কে ও পিতাঠাকুরকে স্মরণ করিয়া মহ! লাজত হইলাম, এবং সুরাপান নিবারণের জন্য দুৰ্জয় প্রতিজ্ঞায় দৃঢ় হইলাম। তদবধি আমি সুরাপান নিবারণের পক্ষে श्रटिशांछि । কাব্যে ছন্দ পরীক্ষা : “নিৰ্বাসিতের বিলাপ’ । মহেশচন্দ্র চৌধুরী মহাশয়ের বাড়িতে থাকিতে থাকিতে ১৮৬৫ কি ১৮৬৬ সালে ভবানীপুরের একটি ভদ্রসন্তান কোনে। গুরুতর অপরাধে দীপান্তরে প্রেরিত হয় । সেই ঘটনাতে ভবানীপুরের লোকের চিত্তকে অতিশয় আন্দোলিত করে, আমারও চিত্তকে অতিশয় আন্দোলিত করে । সেই প্রকার মনের ভাব লইয়া কবিত: লিখতে বসি । কবিতাটি মাতুলের সংবাদপত্র সেমিপ্রকাশে "নির্বাসিতের বিলাপ' নামে প্রকাশিত হয় । মাতুলের হস্তে যখন ‘নির্বাসিতের বিলপে'র প্রথম কয়েক পংক্তি সোমপ্রকাশে মুদ্রিত করিবার জন্য দিয়া আসিলাম, তখন ভয়ে ভয়েই দিয়া আসিলাম। মনে হইল তিনি ডাকিয়! তিরঙ্গার করিবেন। মনে করিয়াছিলাম, দুই-একবার লিখিয়া সমাপ্ত করিব । কিন্তু প্রথমবার কয়েক পংক্তি বাহির হইলে, তিনি কলেজে “আমাকে ডাকিয়া আতিশয় সন্তোষ প্রকাশ করিলেন, এবং আরও কবিতা আছে কি না জিজ্ঞাসা করিলেন । আমি আতিশয় উৎসাহিত হইয়া গেলাম। আমনি আরও লিখিতে বসিলাম । এইরূপে সপ্তাহের পর সপ্তাহ সোমপ্রকাশে কবিতা প্রকাশিত হইতে লাগিল । কয়েকবার প্রকাশিত হইতে না হইতে চারিদিকে সমালোচনা উঠিয়া গেল। পথে ঘাটে, ভাডাটে গাড়িতে লোকে বলিতে লাগিল, “এ 'শ্রীশি' কে হে ?” আমার লাঙ্গুল স্ফীত হইয়া উঠিতে লাগিল । নিজের মনে-মনে মস্ত একটা কবি হইয়া দাড়াইলাম । বাস্তবিক তখন আমার কবিতার মধ্যে একটু নৃত্যুনত্ব ছিল। ইহাতে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ধাধা মিত্রাক্ষর অথব! মাইকেলের খোলা অমিত্রাক্ষর ছিল না, কিন্তু দুইয়ের মধ্যস্থলে যাহা তাহাই ছিল । ভাবকে ছন্দের বশবর্তী না করিয়া ছন্দকে ভাবের বশবর্তী করা হইয়াছিল। প্রধানত এইজন্য ইহা তখন সকলের দৃষ্টিকে আকর্ষণ করিয়াছিল। দ্বিতীয় বিবাহ। আমি যখন কবিতারসে নিমগ্ন আছি, তখন এক পারিবারিক দুর্ঘটনা ঘটিল। কোনো বিশেষ কারণে আমার পিতা আমার পত্নী প্রসন্নময়ীর ও৭ তঁহার বাড়ির লোকের প্রতি কুপিত হইয় তাহাকে পিতৃগৃহে পাঠাইয়া দিলেন। বলিলেন, তঁহাকে আর আনিবেন না । তঁহাকে একেবারে বর্জন করা যখন স্থির A JR