পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সর্বদা বলিতেন, মিডল ক্লাস ইংলিশ হোম-এর ন্যায় ইনষ্টিটিউশান পৃথিবীতে নাই। তাহার মনে হইল, কতকগুলি ব্রাহ্ম পরিবারকে একত্র রাখিয়া, কিছুদিন সময়ে আহার, সময়ে বিশ্রাম, সময়ে কাজ, সময়ে উপাসনা, এইরূপ নিয়মাধীন রাখিয়া, শৃঙ্খলামতো কাজ করিতে আরম্ভ করিলে, তাহারা সেই ভাব লইয়া গিয়া চারিদিকের ব্রাহ্ম পরিবারে ব্যাপ্ত করিতে পারে। এই ভাব লইয়া তিনি ভারত আশ্রম স্থাপন করিলেন। তঁহার অনুচর প্রচারকগণ সর্বাগ্রে গেলেন। তৎপরে আমরা ও অনেকগুলি পরিবার বাহির হইতে গেলাম। আমরা কেশববাবুর মনের ভাবটা কাজে করিয়া দেখিবার জন্য क्रूज्ठश् शशल्लभ । ভারত আশ্রম স্থাপিত হইলে কেশববাবু কলুটােলার বাড়ি পরিত্যাগ করিয়া আমাদের সঙ্গে আসিয়া থাকিতে লাগিলেন । কলিকাতা ১৩ নং মির্জাপুর স্ট্রিট ভবনে (বর্তমান সিটি স্কুলের ভূমিস্থিত ভবনে ) প্রথমে কিছুদিন থাকিয়া পরে শহরের বাহিরে কোনো কোনো বাগানে গিয়া থাকা হয়। প্রথম বেলঘরিয়ায় এক বাগানে, তৎপরে কঁকুড়াগাছির এক বাগানে কিছুদিন থাকা হয়। এই সকল স্থানে গিয়া আমরা কেশববাবুর বিমল সহবাসে থাকিবার অবসর পাইলাম। স্বীয়-স্বীয় ব্যয়ের অংশ দিয়া সকলে একান্নভুক্ত পরিবারের ন্যায় থাকিতাম। একসঙ্গে খাওয়া, একসঙ্গে বসা, একসঙ্গে বেড়ানো-সুখেই কাল কাটিত। শহরে যােহাঁদের কাজ থাকিত, তাহারা দিনের বেলায় শহরে গিয়া কাজ করিয়া আসিতেন । প্রাতে ও সন্ধ্যাতে একসঙ্গে উপাসনা ও একসঙ্গে ধর্মালাপ চলিত। আমরা সকল বিষয়েই পেশিববাবুর পরামর্শ ও সদুপদেশ পাইতাম । আমি ব্রাহ্মধর্ম প্রচার কার্যে আপনাকে অৰ্পণ করিব বলিয়াই ভারত আশ্রমে বাস করিতে গিয়াছিলাম। আমার অগ্রে অভিপ্রায় ছিল যে, আমি কলেজ হইতে উত্তীর্ণ হইয়া ওকালতী করিব, সেই জন্য উকীল বন্ধুদের পরামর্শে তিন বৎসর ‘’ল লেকচার’ শুনিয়া শেষ করিয়া রাখিয়াছিলাম। যত দূর স্মরণ হয়, আমার বি. এল. দিবার ইচ্ছা হইবার আর একটি কারণ ছিল। তদানীন্তন লেফটেনাণ্ট গবর্ণর সংস্কৃত কলেজের প্রিন্সিপাল প্রসন্নকুমার সর্বাধিকাৰী মহাশয়কে বলিয়াছিলেন, “আমি জুডিশ্যাল সাভিস-এ তোমাদের কলেজের ছেলে চাই, কারণ তাহারা ‘হিন্দু ল’ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়।” তদনন্তর সর্বাধিকাৰী মহাশয় আসিয়া আমাদিগকে বি. এল. পরীক্ষা দিবার নিমিত্ত উৎসাহিত করেন ; এবং আমার ভক্তিভাজন মাতুল মহাশয়ও সে বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন । তদনুসারে আমি 'ল লেকচার’ শুনিতে আরম্ভ SB