পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় এক বিষয়ে আন্দোলন উপস্থিত করিতে হয়। সেটি মামার স্কুলটিকে স্বায়ী ভূমির উপর দণ্ডায়মান করিবার চেষ্টা করা । মামা স্কুলটি স্থাপন করিবার সময় একটি অবিবেচনার কার্য করিয়াছিলেন। তঁহার মনে বোধ হয় ছিল যে স্কুলটি উঁচুদরের স্কুল হইবে। সে জন্য তিনি শিক্ষকদিগের বেতনের হার চড়াইয়া বাধিয়াছিলেন। যথা, প্রথম পণ্ডিতের বেতন ৪০ টাকা । কিন্তু ফল এই দাড়াইয়াছিল যে, কেহই তৎপূবে ঐ উচ্চ হারে বেতন পান নাই, হেড পণ্ডিত মহাশয় তৎপূর্বে পাঁচ বৎসর মাসে ২৫ টাকাই পাইয়া আসিতেছিলেন । এইরূপ অপরেরাও স্কুল প্রতিষ্ঠা কালে নির্দিষ্ট বেতন অপেক্ষা অনেক কম বেতন পাইতেন । বেতনের হার বন্ড রাখার ফল এই হইয়াছিল যে, যখনই ছাত্র দত্ত বেতন হইতে কিছু টাকা উদবুক্ত হইত, তাহা ঐ উচ্চ হারের কুক্ষিতে যাইত। বহুদিন হইতে বেঞ্চ ম্যাপ গ্লোব লাইব্রেরি প্রভৃতির জন্য কিছু ব্যয় করা হইত না । এ সকলের অতীব অভাব ছিল ; অথচ তাহা পূর্ণ হইত না । শিক্ষকদিগের কল্পিত বেতনের হার কমাইয়া আমি স্কুলটির উন্নতি করিবার জন্য কৃতসঙ্কল্প হইলাম, এবং সর্বাগ্রে আমার বেতন ১০ ০০ হইতে ৮০১ করিয়া অপরাপর শিক্ষকগণ তৎপূর্বে পাঁচ বৎসর যাহা পাইয়া আসিতেছিলেন তাহাই তাহদের নিদিষ্ট বেতন বলিয়া স্থির করিবার জন্য ইনস্পেক্টরকে লিখিলাম । শিক্ষকদিগের মধ্যে তুমুল আন্দোলন উপস্থিত হইল। আমার মাতার জ্যাঠতুতো ভাই কৈলাসচন্দ্র চক্রবর্তী মহাশয় তখন স্কুলের হেড পণ্ডিত ছিলেন, তিনি এই আন্দোলনে প্রধান নেতা হইলেন। শিক্ষকদিগের মধ্যে কোহ-কেহ স্কুল ভাঙিয়া আর এক স্কুল করিবেন বলিয়া ভয় প্রদৰ্শন করিতে লাগিলেন। আমি কিছুদিন চুপ করিয়া থাকিলাম, তাহাদিগকে গোপনে বুঝাই শাম, আমার উদ্দেশ্য যে স্কুলটির উন্নতি করা, ইহা ভালো করিয়া দেখাইয়া দিলাম। কিন্তু কিছুতেই তঁাহাবা থামিলেন না । অবশেষে একদিন ছুটির পরে সমুদয় শিক্ষককে একত্র করিয়া ঘাড় খুলিয়া তাহদের সম্মুখে বসিলাম। বলিলাম, “যিনি-যিনি স্কুল ছাড়িয়া যাইতে চান ও স্কুলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করিতেছেন, তঁহাদিগকে দশ মিনিট সময় দিতেছি । ইহার মধ্যে স্থির করিয়া বলিতে হইবে, তিনি থাকিবেন কি যাইবেন । যদি থাকেন, স্কুলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করিবেন না, এই প্রতিজ্ঞা করিয়া থাকিতে হইবে।” সকলেই নিরুত্তর রহিলেন, দশ মিনিটের পর সকল আন্দোলন থামিয়া গেল। কিন্তু অনেকে মনেমনে আমার প্রতি বিরক্ত রহিলেন । কি করিব, কর্তব্য বোধে লোকের অপ্রিয় হইতে হইল । যাত্রাদলের সং স্কুলের শিক্ষক । আর একটি আন্দোলন ইহা অপেক্ষাও গুরুতর হইয়া দাড়াইল। আমি স্কুলের ভার লইয়া দেখি, স্কুলের কয়েকটি শিক্ষক গ্রামস্থ শখের S) \eክም