পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইতে কেশববাব বৈরাগ্য প্রচার করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। সে বৈরাগ্য কিরাপ তাহা একটা বলা ভালো। তিনি নিজের ত্রিতল ভবনের ছাদে একটি খোলার ঘর বধিয়া নিজে রধিয়া খাইতে লাগিলেন। আহারের যে নিয়ম ছিল তাহার বড় ব্যতিক্রম হইল না, কেবল জল পানের সময় ধাতুনিমিত প্রস্তুলাসের পরিবতে মাটির কলাস ব্যবহার করিতে লাগিলেন। ঝালি লইয়া নিজের ভবনে ভিক্ষা মাণ্ডিগতে লাগিলেন, পরিবারস্থ ব্যক্তিগণ তাঁহাকে মন্টিভিক্ষা দিতে লাগিলেন। তাঁহার দেখাদেখি প্রচারক মহাশয়দিগের কোহ-কেহ রধিয়া খাইতে লাগিলেন। ইহার অলপদিন পরেই কোন্নগরের সন্নিকটে একটি বাগান লইয়া কেশববাব, তাহার ‘সাধন কানন” নাম রাখিলেন, এবং নিজে প্রচারক দলের সহিত সেখানে বাস করিতে লাগিলেন। সেখানে নিজ হসে-ত রাঁধিয়া খাওয়া, জল তোলা, বাগানের মাটি কাটা প্রভৃতি বৈরাগ্য আচরণ পণ্য মাত্রায় চলিতে লাগিল। তাহা লইয়া কলিকাতার যােবক ব্রাহামদলে খাব হাসাহসি চলিতে লাগিল। ফলত, ইহার কিছদিন পাব হইতেই যািবকদলের উপর কেশববাবার প্রভাব হ্রাস হইতেছিল। ব্রাহমষবকগণের ধারণা জন্মিয়াছিল যে, তিনি এক সময়ে মহর্ষি দেবেন্দুনাথের সহিত বিবাদ করিয়া ব্রাহয় প্রতিনিধি সভা গঠন পর্বক ব্রাহমসমাজে নিয়মতািন্ত্র প্রণালী প্রবতিত করিবার চেস্টা করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু ক্রমশ তাঁহার নিয়মতল প্রণালীতে বিশবাস চলিয়া গিয়াছে। তিনি এখন হয়তো মনে করিতেছেন যে, ধম সমাজের কাযে সাধারণের হাত না থাকিয়া ঈশবর প্রেরিত মহাজনের হাত থাকা কতব্য, এই কারণে তিনি সমাজের কাযে অপরের কতৃত্ব স্থাপিত হইতে দিতে চান না, নিজে সব ময় কতা হইয়া থাকিতে চান। এই সংস্কার হািদয়ে বন্ধমলে হওয়াতে যবেকগণ তাঁহার দিক হইতে মািখ ফিরাইয়া লইতে লাগিলেন। আমাদের মনের উপরে তাঁহার শক্তি অনেক পরিমাণে যেন হ্রাস হইতে লাগিল। ভারত সভা স্থাপন। যখন ব্রাহামসমাজে এই সকল আন্দোলন চলিতেছে, তখন আনন্দমোহন বস, সরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমি, তিনজনে আর এক পরামশে ব্যস্ত আছি। আনন্দমোহনবাব বিলাত হইতে আসার পর হইতে আমরা একত্র হইলেই এই কথা উঠিত যে, বঙ্গদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য কোনো রাজনৈতিক সভা নাই। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন ধনীদের সভা, তাহার সভ্য হওয়া মধ্যবিত্ত মানষদের কম। নয়, অথচ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকের সংখ্যা ও প্রতিপত্তি যেরপ বাড়িতেছে, তাহাতে তাহাদের উপযন্ত একটি রাজনৈতিক সভা থাকা আবশ্যক। আমাদের তিনজনের কথাবাতার পর স্থির হইল যে, অপরাপর দেশহিতৈষী ব্যক্তিগণের সহিত পরামর্শ করা কতব্য। অমতবাজারের শিশিরকুমার ঘোষ মহাশয় আনন্দমোহনবাবরে বন্ধ এবং আমারও প্রিয় বন্ধ ছিলেন। প্রথমে তাঁহাকে পরামশের মধ্যে লওয়া হইল। তৎপরে প্রসিদ্ধ ব্যারিস্টার মনোমোহন ঘোষ মহাশয়কেও লওয়া হইল। মনোমোহন ঘোষের বাড়িতে এই পরামর্শ চলিল। তাহার সকল পরামশে আমি উপস্থিত ছিলাম। না, কাব্যান্তরে অন্যত্র ছিলাম। কি পরামর্শ হইতেছে তাহা আনন্দমোহনবাব ও সরেন্দ্রবাবর মাখে শনিতাম। যখন একটা সভা স্থাপন এক প্রকার স্থির হইল, তখন একদিন আনন্দমোহনবাব । ও আমি ঈশবরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত দেখা করিতে গেলাম। বিদ্যাসাগর। \ মহাশয়ের এরপে প্রস্তাবে বিশেষ উৎসাহ ছিল। তিনি বলিলেন, এতৎস্বারা দেশের Sየ9&)