পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খবশরোলয়ে-যাওয়া এক যােবক ভোরে উঠিয়া ঐ খাটি প্রভৃতি লইয়া যাইতে করিলেন। সেই মামলা মজিলপার গ্রামের পাঁচ-ছয় ক্লোশ উত্তরবতী বারিপর গ্রামের আদালতে হইল। শনিতে পাওয়া যায়, জমিদারবাবরা ঐ মামলার জন্য শািকর মোল্লার নামে স্কুলের জমির এক জাল দলীল প্রস্তুত করাইয়াছিলেন। মামলা উপস্থিত প্রবত্ত হইলেন। এদিকে ব্রাহম যােবকগণ কলিকাতার ব্রাহ বন্ধদিগকে বলিয়া কতিপয় নবীন ব্রাহ উকীল সংগ্রহ করিলেন। তলিভন্ন মামলা দেখিবার কৌতম হলবশত কলিকাতা হইতে অনেক ব্রাহম যােবক বারিপরে গেলেন। আদালত গহে ব্রাহম দশকের ভিড়ের কথা শনিয়া জমিদারবাবরা না কি বলিয়াছিলেন, “ও মা! আমরা। ভেবেছিলাম গ্রামের ঐ কয়েকটা ছোঁড়াই বঝি ব্রাহম; দেশে এত ব্রাহম আছে তা তো জানতাম না।” যাহা হউক, মামলার শেষে শােকর মোল্লার কয়েক মাসের জন্য কয়েদ হইল। সে কয়েদ হইয়া কলিকাতার নিকটবতী আলিপার শহরের জেলে আসিল। তখন আমি ভবানীপরে থাকি,তাম, আমার গ্রামবাসী ব্রাহাম যােবক হরনাথ বস মহাশয় কালীঘাটে থাকিতেন। শািকর মোল্লা মনিবের আদেশে অন্যায় কাজ করিয়া কয়েদ হইয়াছে, ইহার জন্য হরনাথবাব বড়ই দঃখিত হইয়াছিলেন। তিনি কয়েদখানায় শািকর মোল্লাকে দেখিতে ও তাহার জন্য খাবার লইয়া যাইতে লাগিলেন। যত দর সমরণ হয়, আমি তখনও প্রকাশ্য ভাবে ব্রাহসমাজে যোগ দিই নাই, কিন্তু সাধ, উমেশচন্দ্র দত্ত, কালীনাথ দত্ত, হরনাথ বসা প্রভৃতি ব্রাহম যবকদিগকে প্রগাঢ় শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিতে আরম্ভ করিয়াছি। হরনাথবাব আমাকে শােকর মোল্লার কয়েদের জন্য দঃখিত দেখিয়া, প্রতি রবিবার আলিপার জেলখানায় গিয়া শােকর মোল্লাকে মিঠাই প্রভৃতি খাওয়াইয়া আসিবার ভার আমার প্রতি দিলেন, আমি তাহাই করিতে লাগিলাম। এই জন্য শািকর মোল্লার কয়েদের কথা আমার মনে আছে। স্বয়ং জমিদারবাবরাও সেই জমি হইতে ব্রাহমাদিগকে বঞ্চিত করিবার জন্য চেন্টা করিয়া কৃতকাষ হইলেন না, ইহাতে ব্রাহমদের প্রভাব বাড়িয়া গেল। তখন অন্য প্রকার নিযাতন আরম্ভ হইল। একজন ব্রাহম যােবক “পাড়াগাঁয়ে এ কি দায়, ধম রক্ষার কি উপায় ?” নাম দিয়া এক নাটক রচনা করিলেন। তাহাতে জমিদারবাবদিগকে লোকচক্ষে উপহাসাসম্পদ করিবার চেন্টা করা হইল। বিবাদটা আরও পাকিয়া গেল। অবশেষে নিষেধ করিলেন। বলিলেন, “যে মেয়ে পাঠাবে, তাকে একঘরে করব।” আমি যখন প্রতি রবিবার গিয়া আলিপার জেলে শািকর মোল্লাকে খাওয়াইতেছি, তখন জমিদারবাবদের শাসনে সবুকুলে মেয়ে পাঠানো প্রায় বন্ধ হইয়াছে, কেবল আমার পিতামাতার দঢ়চিত্ততার গণে আমার দই ভগিনীকে লইয়া পণ্ডিত স্কুল চালাইতেছেন। ব্রাহণ পিতার তেজক্তিবতা। অধিকাংশ গহস্থই জমিদারবাবদের নিষেধ। শনিল, শািন্ধ আমার বাবা ও মা শনিলেন না। তাঁহারা উভয়ে তেজী, মানষ, অতিশয় সত্যপরায়ণ ন্যায়পরায়ণ লোক ছিলেন। বিদ্যাসাগরের প্রিয় লোক, তাঁহারা লোকের বিরাগের প্রতি দণ্টিপাত করিলেন না 7 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রকৃতির অনেক দোষ গণ আমার পিতাতে ছিল। তিনি বলিলেন, “কি! এত বড় আসািপধার কথা ? আমার ܬGE