পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬২-৬৭ ] ধর্ম্মের আদেশে চলিবার সংকল্প Sos উমেশ ও আমি চিৎপুর রোড দিয়া আসিতেছি, এমন সময় বৃষ্টি আসিল তখন কেশববাবু চিৎপুর রোডে “কলিকাতা কলেজ” নামে একটী কলেজ, খুলিয়াছিলেন। আমরা বৃষ্টির ভয়ে ঐ কলেজের বারাণ্ডার নীচে গিয়া দাড়াইলাম। উমেশ আমাকে ভিতরে যাইবার জন্য পীড়াপীড়ি করিতে লাগিল ; আমি লজ্জাতে ভিতরে যাইতে পারিলাম না। এমন সময় একটী পশ্চিমে বেহার উপর হইতে নামিয়া আসিল । আমরা কেশববাবুর কথা জিজ্ঞাসা করাতে সে বলিতে লাগিল, “কেশববাবু মানুষ নয়, দেবতা ; তার কাছে চল, দুটী কথা শুনলে প্রাণ জুড়িয়ে যাবে।” তার প্রভু-ভক্তি দেখিয়া তাহা পরীক্ষা করিবার জন্য আমরা কেশববাবুর কল্পিত নিন্দ আরম্ভ করিলাম। তাহাতে সে আতিশয় বিরক্ত হইল ; এবং অবশেষে আকাশের দিকে দুই হাত তুলিয়া কেশববাবুর দীর্ঘজীবনের জন্য, ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিতে লাগিল। আমি দেখিয়া স্তব্ধ ও মুগ্ধ হইয়া গেলাম। বলিলাম, । “উমেশ, এ সামান্য মানুষ নয়, র্যার চাকর এত দূর আকৃষ্ট হতে পারে।” তখন উমেশ আবাবু আমাকে কেশববাবুর নিকট যাইবার জন্য চাপিয়া ধরিল ; কিন্তু আমি লজ্জাবশতঃ যাইতে পারিলাম না। ইহার পরে উমেশ "যোগেন্দ্র ও অপরাপর ক্লাসের ছেলেদের সঙ্গে আমি আমাদের পূর্বতন সহাধ্যায়ী বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ও অঘোরনাথ গুপ্ত এই বন্ধুদ্বয়ের বাসাতে মধ্যে মধ্যে যাইতে লাগিলাম। ইহঁরা এক সময় আমাদের সঙ্গে একশ্রেণীতে পড়িতেন ; কিন্তু তখন ব্রাহ্মধর্ম্ম-প্রচারক হইয়াছিলেন- একদিন রাত্রে বিজয় ও অঘোর আমাকে । আর ভবানীপুরে যাইতে দিলেন না, নিজেদের বাসাতে রাখিলেন। আমার স্মরণ আছে যে, সে রাত্রে তাঁহাদের বাসাতে অন্যজাতীয়া স্ত্রীলোকের রাধা ভাত মাটীর সানকে খাইয়া সমস্ত রাত্রি এত গা ঘিনঘিন করিয়াছিল যে ভাল করিয়া ঘুমাইতে পারি নাই। . . .