পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S88 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৫ম পরিঃ র্তাহার কোলে বসাইয়া দিলাম। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাকে বুকে ধরিয়া আদর করিতে লাগিলেন ; শেষে যাইবার সময় মেয়েটকে ও তাহার মাকে পালকী করিয়া তৎপরদিন বৈকালে তাহার ভুবনে श्रांछेिदांत জন্য অনুরোধ করিয়া গেলেন, এবং আমাকে বলিয়া গেলেন, “মেয়েটাকে বেথুন স্কুলে ভর্ত্তি করে দেও, মাহিনী আমি দেব।” পরদিন বৈকাল বেলা মেয়েটকে ও তার মাকে পালকী করিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাটীতে পাঠান গেল। তাহারা সন্ধ্যার সময় আসিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জননী ভগবতী দেবীর যে প্রশংসা করিল, তাহা শুনিয়া আমাদের মন পুলকিত হইয়া উঠিল। শুনিলাম, ভগবতী দেবী ছুতরের মেয়ে বলিয়া তাহাদিগকে ঘৃণা করা দূরে থাকুক, মেয়েটাকে কোলে জড়াইয়াছেন, কাছে বসিয়া তাহাদিগকে খাওয়াইয়াছেন, এবং আসিবার সময় দুজনকে কাপড় দিয়াছেন। দুঃখের বিষয়, এই মেয়েটকে বেথুন স্কুলে ভর্ত্তি করিবার পূৰ্বেই সেই বাড়াতে বিষম কলেরা রোগে মহালক্ষ্মীর মৃত্যু হইল ; আমাদের বাসা ভাঙ্গিয়া গেল ; আমরা ছড়াইয়া পড়িলাম ; মেয়েটার মাও ছুতরের মেয়েটার পরবত্তী জীবন।-ঈষ্ঠীর বহুদিন পরে মেয়েটার সহিত আমার আবার একবার সাক্ষাৎ হইয়াছিল,তাহা এই সঙ্গেই বলা যাউক । তখন আমি সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের আচার্য্য, এবং ব্রাহ্মসমাজ লাইব্রেরি গৃহে বাস করি। একদিন একজন ভৃত্য কোনও স্ত্রীলোকের একখানি পত্র লইয়া উপস্থিত। খুলিয়া দেখি, সেখানি ঐ মেয়েটার পত্র। সে আমাকে লিখিয়াছে, “বহু বৎসর পূর্বে চাপাতলার দিবীর কোণের এক বাড়ীতে পাড়ার একটী ৭৮ বৎসরের বালিকা আপনাকে দাদা বলিত ও কোলে পিঠে উঠিত, আপনার হয়ত মনে আছে। আমি সেই হতভাগিনী।