পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচ্ছেদ ] পিতামহী। G এক প্রাচীরে আবদ্ধ ছিল । একদিন শীতকালে সন্ধ্যার প্রাক্কালে আমার পিতামহ সায়ংসন্ধ্যা করিয়া খড়ম পায়ে উঠানে বেড়াইতেছেন, প্রপিতামহদেব সায়ং সন্ধ্যাতে নিমগ্ন আছেন, পিতামহী ঠাকুরাণী রন্ধনশালাতে পাকাকার্য্যে” রত আছেন, এমন সময়ে পাশ্বের প্রতিবেশীদের বাড়ী হইতে । “বাঘ, বাঘ” চাৎকার উঠিল। পিতামহ মহাশয় কৌতুহলাক্রান্ত হইয়া দেখিবার জন্য সেদিকে উকি মারিলেন, আমনি বাঘের সঙ্গে চোকা চোকি । তিনি চাৎকার করিয়া বলিলেন, “বাবা, সত্যি ত বাঘ, আমাকে নিলে যে !” প্রপিতামহ বলিলেন, “দাড়িয়ে থাক, পিছন ফিরিস না ।” অমনি যিনি যেখানে যে কাজে ছিলেন, সকলেই আমার পিতামহের রক্ষার জন্য চুটিয়া আসিলেন। পিতামহী ঠাকুরাণী উনান হইতে এক জ্বলন্ত কাঠ লইয়া বাঘের দিকে ধাবিত হইলেন। শুনিতে পাই, সেই প্রজ্বলিত অগ্নি দর্শনে বাঘ ভাত হইয়া যে দ্বারা দিয়া প্রবেশ কবিয়ছিল, সেই দ্বারা দিয়া মহাবেগে বহির্গত হইয়া গেল। তখন জানিতে পারা গেল, কোনও প্রতিবেশীর একটি নবাগত বধু একটা খিড়কীর দ্বার খুলিয়া রাখিয়া আসিয়াছিলেন, বাঘ তাহা দিয়াই প্রবেশ করিয়াছিল । আমার পিতামহীর সমগ্র চবিত্র এই সাহস ও প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের অনুরূপ ছিল । গ্রামেই বাপের বাড়ী, তাহাতে বাপের পদস্থ ও গর্ব্বিত লোক, এজন্য তাহার দোদণ্ড-প্রতাপে পাড়ার লোক সশঙ্ক-চিত্তে বাস ক্লারিত। আমার পিতা শ্রীযুক্ত হরানন্দ বিদ্যাসাগর তাঁহারই গর্ভজাত পুত্র । তিনি স্বীয় জননীর ব্যক্তিত্ব ও প্রখর তেজস্বিতা প্রচুর পরিমাণে পাইয়াছিলেন। পিতামহ ।-পিতামহ ঠাকুর স্বৰ্গীয় রামকুমার ভট্টাচার্য্য আকৃতি ও প্রকৃতিতে পিতামহী হইতে সম্পূর্ণ বিভিন্ন ছিলেন। পিতামহী গৌরাঙ্গী, তিনি শ্যামবর্ণ, পিতামহী অসহিষ্ণু, তুিনি সহিষ্ণু; পিতামহী অন্যায়ের গন্ধ পাইলেই অগ্নিমূর্ত্তি ধারণ করিতেন, পিতামহ ঠাকুর অনেক অন্যায় শাস্ত