পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W9 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [의 ভাবে বহন করিতেন ; এমন লোক ছিল না যে, পিতামহী ঠাকুরাণীকে অপমানের কথা শুনাইয়া দশ কথা না শুনিয়া যায়, পিতামহ মহাশয় অনেক অন্যায় কথা ও ব্যবহার নির্বাক থাকিয়া সহ্যু করিতেন, অপমানের সম্ভাবনা হইতে দূবে থাকিতেন ; পিতামহী ঠাকুরাণী নিজগৃহের সুখ-সমৃদ্ধি সর্ব্বাগ্রে তেন, সেই দিকে প্রধান দৃষ্টি রাখিতেন, বাহিরের লোকের সুখদুঃখের দিকে ততটা মন দিতেন না ; পিতামহের হৃদয়ের দ্বার বাহিরের লোকের জন্য সর্ব্বদাই উন্মুক্ত ছিল। তিনি অতিশয় দয়ালু মানুষ ছিলেন। বড়পিসীর মুখে নিম্নলিখিত গল্পটী শুনিয়াছি। একাদশ স্বাস্থািপসী দোলাতে বসিয়া আছেন, এমন সময় পিতামহ ঠাকুর স্নান করিয়া আসিলেন । আসিয়াই সত্বাব শয়ন-ঘরে প্রবিষ্ট হইলেন । পিত্নী প্রদখিলেন, তিনি গামছাখানি পরিয়া আসিয়াছেন, পরিধেয় বস্ত্র নাই । তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাবা ! তােমার কাপড় কোথায় ফেলে এলে ?” পিতামহ তঁহাকে নিকটে ডাকিয়া চুপে চুপে বলিলেন, “চেচিয়ে না। মা ! তোমার মা যেন ষ্টের পায় না, কাপড়খানা একজন গরীবকে দিয়ে এসেছি।” ইহাতে বুঝিতে পারা যাইতেছে, পিতামহ মহাশয়কে অনেক সম, পিতামহীঠাকুরাণীর ভয়ে লুকাইয়া দান করিতে হঠােত আমােৱ “ ঠাকুব স্বায়ু মাতার এই তেজস্বিতা ও নিজ পিস্তাব “ এই সহৃদয়ত, উভয়ই পাইয়াছিলেন । পিতামহ ও পিতামহীর মৃত্যু 1–১৮৩৩ খ্রীষ্টাব্দে কলিকাতাব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্ত্তী প্রদেশে ভীষণ সাইক্লোন হয়। এই ঝড়ে সমুদ্রতরঙ্গ উঠিয়া আমাদের গ্রামের দক্ষিণবর্ত্তী সমুদয় প্রদেশকে প্লাবিত করে। সেই সময়ে হাজার হাজার লোক মারা যায়। তদনন্তর ওলাউঠা রোগ বঙ্গদেশে প্রথম দেখা দিয়া আরও সহস্ৰ সহস্ৰ লোককে নিধন প্রাপ্ত করে। সেই ওলাউঠা রোগে দশদিনের মধ্যে আমার পিতামহ প্রপিতামহী ও পিতামহী মারা পড়েন । ।