পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)পিতৃগৃহ হইতে তাড়িত হওয়া । Ay [ ه۹ و هیاطلا না । কিন্তু আমি জননীর জন্য বাড়ীতে না গিয়া থাকিতে পারিতাম না । আমার মা তখন কি দশাতে বাস করিতেছিলেন, তাহা বর্ণনীয় নহে। আমি তাহাকে দেখিতে যাইতাম, কিন্তু আমার পিতার ইচ্ছা নয় যে, আমি গ্রামে পদার্পণ করি। আমি তাঁহাকে গোপন করিয়াই তাহার অনুপস্থিতিকালে বাড়ীতে যাইতাম। তিনি লোকমুখে, আমি মার কাছে গিয়াছি শুনিলেই, আমাকে প্রহার করিবার জন্য গুণ্ডা ভাড়া করিয়া লইয়া আসিতেন। পাড়ার ছোট ছেলেরা আমাকে বড় ভালবাসিত ; বাবা লাঠিয়াল লইয়া আসিতেছেন দেখিলেই তাহারা গোপনে দৌড়িয়া আসিয়া আমাকে সংবাদ দিয়া যাইত; আর আমনি আমি মাতার চরণ খুলি লইয়া খিড়িকীর দ্বার দিয়া পলাইতাম । পলাইয়া আসিয়া আমার গ্রামবাসী ব্রাহ্মবন্ধু কালীনাথ দত্ত মহাশয়ের বাড়ীতে আশ্রয় লইতাম । আমি পরে শুনিয়াছিলাম, বাৰা এইরূপে কয়েক বৎসরের মধ্যে লাঠিয়াল নিযুক্ত করিবার জন্য ২২২ টাকা খরচ করিয়াছিলেন। দরিদ্র ব্রাহ্মণের পক্ষে আমাকে মারিবার জন্য ২২২ টাকা ব্যয় করা সামান্য প্রতিজ্ঞার দৃঢ়তার কথা নয়। বাবার প্রতিজ্ঞার এই দৃঢ়তা আমাতে কিছু অধিক মাত্রায় থাকিলে ভাল হইত। শেষে বাবা কেন যে সে সংকল্প ত্যাগ করলেন, বলিতে পারি না। শুনিয়াছ, গ্রামের মেয়ের বিরোধী হওয়াতে তঁহাকে সে সংকল্প ত্যাগ করিতে হইল। গ্রামের লোকে চিরদিন আমাকে ভালবাসে। আমি পিতাকে লুকাইয়া গ্রামে যাইতাম বটে, কিন্তু গ্রামের আত্মীয়গণের সহিত দেখা করিতাম ; বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়া মেয়েদের সঙ্গে দেখা করিতাম । মেয়েরা আমাকে বড় ভালবাসিতেন, আমি মেয়েদিগকে ভাল বাসিতাম। শেষে মেয়েদের ভাব দেখিয়া গ্রামের লোকে বাবুকে বলিতে লাগিল, “তুমি তাকে বাড়ীতে যেতে না দিতে পার, কিন্তু গ্রামে আসিতে দেবে না, এ কেমন কথা ? তুমি কি গ্রামের মালিক ?”