পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

dyr শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৭ম পরিা আশায় তাহাকে অগ্রে কয়েকবার আনিতে গিয়া বিফল-মনোরথ হইয়া সে চেষ্টা কিছুদিনের জন্য পরিত্যাগ করিয়াছিলাম। এক্ষণে তাহার পিতৃব্যের অনুরোধে পুরাতন কর্ত্তব্য-জ্ঞানটা আমার মনে প্রবল হইয় উঠিল। কিন্তু আমার ব্রাহ্মবন্ধুদিগের মধ্যে অনেকে তঁহাকে আনিবার প্রস্তাবের প্রতিবাদ করিয়া বলিতে লাগিলেন, “ব্রাহ্ম দুই স্ত্রী লইয়া একত্র বাস করিবে, ইহা বড়ই খারাপ কথা । বহুবিবাহের প্রতিবাদ আমাদের এক প্রধান কাজ। দুই স্ত্রী লইয়া একত্র থাকিলে তুমি বহুবিবাহের প্রতিবাদ করিবে কিরূপে ?” আমি বলিলাম, “আমি ত দুই স্ত্রী নিয়ে ঘরকন্ন৷ করব বলে আনতে যাচ্চি না। সে বেচারির অপরাধ কি যে, পিত। মাতা গত হওয়ার পরেও তাকে আশ্রয় দিব না ? এ বহুবিবাহের অপরাধ ত তার নয়, সে অপরাধ আমার। আমি তাকে এনে লেখাপড়া শিখাব, সে রাজি হলে তার আবার বিয়ে দেব বলে আনতে যাচ্চি।" এই মতভেদ লইয়া আমি কেশব বাবুর শরণাপন্ন হইলাম। তিনি বিরাজমোহিনীকে আনিতে পরামর্শ দিয়া বলিলেন, “বাল্যবিবাহের দেশে বহুবিবাহে মেয়েদের অপরাধ কি ? একজন যদি দশটা মেয়ে বিবাহ ক’রে ব্রাহ্ম হয়, পরে সে দশজনকে আশ্রয় দিতে বাধ্য। এমন কি, আশ্রয় না দেওয়াতে উক্ত স্ত্রীলোকদের কেহ যদি বিপথে যায়, তার জন্তু সে দায়ী ।” পুনর্বিবাহের প্রস্তাবে বিরাজমোহিনীর ঘুণ।-আমি কর্ত্তবাবোধে ১৮৭২ সালের মধ্যভাগে বিরাজমোহিনীকে আনিতে গেলাম। তঁহাকে প্রত্নীভাবে গ্রহণ করিব না, কিন্তু পুনঃপরিণীত না হওয়া পর্যন্ত রক্ষা ও শিক্ষার বন্দোবস্ত করিব, যতদূর মনে হয় এই ভাবেই আনিতে গিয়াছিলাম। আশ্রমে রাখিব ও মহিলা-বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি করিয়া দিব ; পরে তিনি যদি পুনঃপরিণীত হইতে না চান, লেখাপড়া শিখিলে কোন তা" কাজে বসাইয়া দিব ; তিনি সুখী হইবেন, ও আত্মরক্ষা করিতে পরিবেণী ;